আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে হাসপাতালে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। হাদিকে দেখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শরিফ ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে হাদিকে দেখতে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা-৮ আসনে হাদির প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জা আব্বাস।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, “আল্লাহ আমার ভাইকে বাঁচাইয়া রাখো।”
ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। কোনোমতেই নয়। আমাদের মতাদর্শ যাই হোক, ভয়ভীতি বা শক্তির আশ্রয় নিলে তাকে একসঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বিকালে ফেসবুকে লিখেছেন, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বিগ্ন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তিনি বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
তিনি আরও বলেন, “কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা মতভিন্নতার কারণে এ ধরনের সহিংসতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করছি এবং দোয়া করি, আল্লাহ তাআলা তাকে পূর্ণ সুস্থতা দান করুন।”
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, বিকেল ২টা ২২ মিনিটের দিকে পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ডিআর টাওয়ারের সামনে হাদি গুলিবিদ্ধ হন। তিনটি মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা এসে একটি মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, হাদিকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী বলেন, নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়।
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোডে নির্বাচনী প্রচার চলার সময় জুমার নামাজের পর দুর্বৃত্তরা হাদির ওপর গুলি চালায়।
গত নভেম্বর মাসে দেশি–বিদেশি প্রায় ৩০টি নম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন হাদি। ১৪ নভেম্বর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি দাবি করেছিলেন, তাকে হত্যা, তার বাড়িতে আগুন দেওয়া এবং তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদি লিখেছিলেন, গত তিন ঘণ্টায় আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে তাকে কল ও টেক্সট করেছে। তাদের বার্তার সারমর্ম ছিল—তাকে সারাক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে, তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হবে, তার মা–বোন–স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হবে এবং শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করা হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

