অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো : তারেক রহমান

সোমবার,

১৫ ডিসেম্বর ২০২৫,

১ পৌষ ১৪৩২

সোমবার,

১৫ ডিসেম্বর ২০২৫,

১ পৌষ ১৪৩২

Radio Today News

অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো : তারেক রহমান

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ২১:১০, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

Google News
অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো : তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে প্রত্যাশা রেখে বলেছেন, ‘আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামে গঞ্জে, শহরে নগরে বন্দরে, বাজারে মহল্লায়, অলিতে গলিতে, রাজপথে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো ইনশাআল্লাহ।’       

তিনি বলেছেন, ‘১৯৭১, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থান, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রমাণিত হয়েছে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনতার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’  

আজ সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চূয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন। 

তারেক রহমান বক্তব্য শুরুর আগে সভায় উপস্থিত নেতা কর্মীরা উচ্চস্বরে স্লোগান দিতে থাকেন. ‘তারেক রহমান আসছে, বাংলাদেশ হাসছে, ২৫ তারিখ সারাদিন, বাংলাদেশের খুশির দিন।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্বশর্তই হচ্ছে, জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক  রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এ কারণেই বিএনপি সবসময় রাষ্ট্র এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যেকোনো মূল্যে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।’

ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের জনগণ সাক্ষী, অকারণ শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানারকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তবুও বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের কাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে। 

তবে ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? আমি মনে করি কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।’ 

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা খুশি হবে? নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে।’

সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি অপশক্তি তখনো যেমন সক্রিয় ছিল এখনো সক্রিয়। সময়ের সাথে সাথে ষড়যন্ত্রকারীদের রং-রূপ-চেহারা হয়তো পাল্টেছে চরিত্র কিন্তু পাল্টায়নি।’ 

তারেক রহমান দৃঢ় কন্ঠে বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। ভয়ের কিছু নেই, মানুষের জয়-পরাজয়, জীবন-মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর হাতে নির্ধারিত। সুতরাং, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।’ 

বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করেই সাগরের বুকে ভেসে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়।  লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য মা-বোনের সম্মান সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডটির  স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গল্প, বই,  কবিতা রচিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলী নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ রয়েছে। এই নিবন্ধটি আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দলিল। 

একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, ‘পতিত পলাতক একটি চক্র স্রেফ নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপরিণামদর্শী অপচেষ্টার কারণেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে। তবে পরাজিতের মুখে বিজয়ের ইতিহাস রচনা বেমানান, লজ্জার। ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।   

পরাজিত চক্রকে মোকাবেলায় প্রতিশোধ প্রতিহিংসার পরিবর্তে  ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিজয় বার্তাকে শুধুমাত্র উদ্দীপ্ত স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আবারো জনগণের সহযোগিতা সমর্থন এবং সুযোগ প্রত্যাশা করছে। 

তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী দশকটি হবে রূপান্তরের দশক’ এই চিন্তা নিয়েই আমরা ‘দেশ গড়ার কর্মসূচি’ বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটির বেশি তরুণ, কোটি কোটি কৃষক-শ্রমিক, কর্মক্ষম এই জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশের বিজয়কে সুসংহত করাই বিএনপির লক্ষ্য।’

পরিশেষে তিনি বলেন, ‘একটি স্বনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমেই আমার আমাদের আগামীর প্রতিটি বিজয় দিবসকে আরো গৌরবান্বিত এবং আরো অর্থবহ  করে তুলতে চাই।’    

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার  সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচারয অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের