ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসিকে ঘিরে উৎসবের নগরী কলকাতা মুহূর্তেই রূপ নিল রণক্ষেত্রে। অব্যবস্থাপনা, দর্শকদের ক্ষোভ, ভাঙচুরের পর এবার মেসিকে ভারতে আনার মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পলকে নিয়ে যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রবেশ করেন মেসি। পরিকল্পনা ছিল ‘ল্যাপ অব অনার’ দিয়ে দর্শকদের অভিবাদন জানাবেন। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা মেসিকে এমনভাবে ঘিরে ধরেন যে গ্যালারি থেকে তাকে দেখাই যাচ্ছিল না।
মেসিকে দেখতে না পেয়ে একপর্যায়ে ধৈর্য হারান দর্শকরা। ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দ্রুতই রূপ নেয় বিক্ষোভে। গ্যালারি থেকে বোতল ছুড়তে শুরু করেন ক্ষুব্ধ ভক্তরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নিরাপত্তার স্বার্থে মাত্র ২০ মিনিটের মাথায় মেসিকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপরই শুরু হয় আসল লঙ্কাকাণ্ড। ক্ষুব্ধ জনতার একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ে। ছিঁড়ে ফেলা হয় ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর’-এর সব ব্যানার ও পোস্টার। ভাঙচুর চালানো হয় গ্যালারির আসনে। এমনকি মাঠের ঘাস, চেয়ার এবং সাজানো গাছের টব লুট করে নিয়ে যেতে দেখা যায় অনেককে।
এক ভক্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ১২ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছি। অথচ মেসির চারপাশে শুধু নেতা আর অভিনেতারাই ভিড় করে ছিল। আমাদের কেন ডাকা হলো যদি তার মুখটাই দেখতে না পাই?’
কলকাতা পর্ব শেষে হায়দরাবাদ যাওয়ার কথা ছিল মেসির। সেই উদ্দেশ্যেই বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তিনি বলেন, ‘আমরা মূল আয়োজককে আটক করেছি। এই অব্যবস্থাপনার জন্য কেউ ছাড় পাবে না। সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দর্শকদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

