
টেস্ট ক্রিকেট মানেই নাটকীয়তা, উত্তেজনা আর হঠাৎ বদলে যাওয়া ম্যাচের মোড়। এসব নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর ম্যাচের বদলে যাওয়ার পেছনে থাকে কিছু গল্প। আর এমনই এক রোমাঞ্চকর ঘটনার সাক্ষী ছিল জোহানেসবার্গ, যেখানে বিরিয়ানি খাওয়াকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামির অনুপ্রেরণার গল্প।
সাবেক ভারত কোচ রবি শাস্ত্রীর সামান্য এক ঠাট্টা কীভাবে এক পেসারের রাগকে রূপ দিল বিধ্বংসী বোলিংয়ে, তা জানিয়েছেন শাস্ত্রী নিজেই।
ঘটনা ২০১৮ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জোহানেসবার্গ টেস্টে। ভারত তখন হোয়াইটওয়াশের মুখে। শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা সহজ জয়ের পথে, হাতে ৭ উইকেট, দরকার মাত্র ১০০ রানের কম। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে লাঞ্চ ব্রেকে ড্রেসিংরুমে ঘটে যায় অদ্ভুত এক ঘটনা।
রবি শাস্ত্রী নিজেই সেই ঘটনা বর্ণনা করেছেন সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্কে প্রচারিত একটি ভিডিওতে। তিনি বলেন, ‘ম্যাচে উত্তেজনা তখন তুঙ্গে। লাঞ্চের সময় আমি হাঁটছিলাম, হঠাৎ দেখি শামির প্লেটে বিরিয়ানির বিশাল এক অংশ।’
তখন শাস্ত্রী ঠাট্টা করে বলেন, ‘তেরি ভুখ ইধার ঠীক হো গয়া কিয়া? (তোর খিদে কি এখন মিটে গেছে?)”—যা শুনে শামি ক্ষেপে যান এবং বিরিয়ানি না খেয়ে রেখে দেন।
বলে রাখা ভালো, ম্যাচ চলাকালীন শামি তখনো বোলিংয়ে খুব একটা ছাপ ফেলতে পারেননি। শাস্ত্রীর কথায় তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন শামি। উত্তরে ক্ষুব্ধ শামি বলেন, ‘নিয়ে নাও প্লেট। লাগবে না বিরিয়ানি। ওই বিরিয়ানি তো জাহান্নামে যাক!’
শাস্ত্রী তখন বোলিং কোচ ভরত অরুণকে বলেন, ‘ও রেগে গেছে, ওকে ওই অবস্থায় থাকতে দাও। যদি কিছু বলতে চায়, আগে কিছু উইকেট নিয়ে তারপর কথা বলুক।’
শাস্ত্রীর কৌশল কাজে লেগে যায়। বিরতির পর বল হাতে পুরোপুরি বদলে যান শামি। দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডার তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। মাত্র ৩৩ রানের মধ্যে শেষ সাত উইকেট হারিয়ে ম্যাচে ৬৩ রানে জয় পায় ভারত। শামি শেষ পাঁচ উইকেটের মধ্যে চারটিই নেন, সঙ্গে আগে নিয়েছিলেন ওপেনার এইডেন মারক্রামের উইকেট।
তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৫/২৮। জোহানেসবার্গের কঠিন উইকেটে এই স্পেল ভারতকে এনে দেয় ৬৩ রানের ঐতিহাসিক জয়। আর তাতেই ভারত বেঁচে যায় ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হতে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম