ছবি: সংগৃহীত
মায়ের ভাষ্যমতে, শিশুটির মুখের প্রথম শব্দ ছিল পিজ-যার অর্থ পেন্সিল। মা কী তখন বুঝেছিলেন তাঁর সন্তানটি এই পেন্সিল দিয়েই একদিন বিশ্ব জয় করবে? তবে, তেরো বছর বয়সে চুপিসারে বাবার অসমাপ্ত কাজ দক্ষতার সাথে করতে দেখে বাবা কিন্তু ঠিকই বুঝেছিলেন, এই ছেলে একদিন ঠিকই ছাড়িয়ে যাবে সবাইকে। বলছিলাম বিশ শতকের বিস্ময়কর প্রতিভা পাবলো পিকাসোর কথা। একাধারে চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, কবি ও নাট্যকার পিকাসো।
বাবা রুইজ ছিলেন আর্ট কলেজের শিক্ষক। শিশুকাল থেকে আঁকাআকির সহজাত প্রতিভা থাকলেও, বাবার কাছ থেকে মাত্র ৭ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিক হাতেখড়ি পিকাসোর। আনুষ্ঠানিক পাঠগ্রহণে নয় ; বরং স্বাধীনভাবে কাজ করতেই পছন্দ করতেন তিনি। তাইতো রং নির্বাচন থেকে শুরু করে উপকরণের ব্যবহার ; সবকিছুতেই তাঁর স্বাধীনচেতা শিল্পীমনের পরিচয় পাওয়া যায়। রং, কাঁদা, বালি, কাঠ, গিটার, পাইপ, কাচের টুকরো-এসব অতি সাধারণ জিনিসই তাঁর হাতের ছোঁয়ায় হয়ে উঠতো জীবন্ত।
অনন্য নির্মানশৈলীর জন্য আজও শিল্পবোদ্ধাদের আর্কষণের কেন্দ্রে তাঁর ৫০ হাজারেরও বেশি শিল্পর্কম। স্পেনের গৃহযুদ্ধের বিরুদ্ধে আকাঁ চিত্রকর্ম গোয়ার্নিকা কিংবা সিকাগোর ৫০ ফুট দীর্ঘ ‘সিকাগো পিকাসো ’ ভাস্কর্য আজো বিস্ময় জাগায় শিল্প অনুরাগীদের মনে। তার উইমেন অব আলজিয়ার্স ছবিটি ২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দামি শিল্পকর্ম হিসেবে বিক্রি হয়েছিল প্রায় ১৪০ কোটি টাকায়।
তিন শতাধিক কবিতা লিখেছেন বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী পিকাসো। লিখেছেন-‘ডিজায়ার কট বাই দ্যা টেইল’ ও দ্যা ফোর লিটল গার্লস নামে দুটি নাটকও। ‘দ্যা মিস্ট্রি অব পিকাসো’ সহ বেশকিছু আর্টফিল্ম ও ডকুমেন্টারীও হয়েছে তাঁকে নিয়ে যেখানে তার উপস্থিতি মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।
১৯৭৩ সালে ৯১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী পাবলো পিকাসো, ১৮৮১ সালের ২৫ অক্টোবর স্পেনের মালাগায় এক ক্যাথোলিক খ্রিষ্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিনে বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী এই কিংবদন্তিকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায়।