জামালপুরের একটি আবাসিক মাদ্রাসা থেকে তিন দিন আগে নিখোঁজ হওয়া তিন ছাত্রীকে রাজধানীর মুগদা এলাকা হতে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে পুলিশের একটি দল একটি বাড়ি থেকে তাদের উদ্ধার করে।
জামালপুর জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, ওই তিন ছাত্রী মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে জামালপুরের ইসলামপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নামে। পরে তারা একটি রিকশা ভাড়া করে। কিন্তু কোথায় যাবে তারা বলতে পারছিল না। পরে ওই রিকশাচালক তাদের মুগদায় নিজ বাসায় নিয়ে রাখেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে জামালপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ইসলামপুর সার্কেল) মো. সুমন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই রিকশাচালকের বাড়ি থেকে তিন ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
এরআগে জামালপুর জেলার ইসলামপুর মহিলা মাদ্রাসা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় তিন ছাত্রী। পুলিশ জানায়, গোয়ালেরচর দারুত তাক্বওয়া আবাসিক ছাত্রীদের মাদ্রাসা থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর এ তিন কন্যাশিশু নিখোঁজ হয়। ঘটনার পর পুলিশ মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দিয়েছে। আবাসিক অন্য ছাত্রীদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের অভিভাবকদের হাতে। আর মানবপাচার আইনে নিখোঁজ শিশু মনিরার বাবার মামলায় আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে চার মাদ্রাসা শিক্ষককে। মোট ৯ জনকে দায়ী করে মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, নিখোঁজ শিশুদের বয়স সাত বছর। তিনজনই দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। নিখোঁজ শিশু মিমের মা হাসিনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মেয়ের জন্য খাবার নিয়ে আসেন। তখন শিক্ষকরা তাকে জানান ভোরে নামাজের জন্য উঠতে বললে তিন শিশু পিছনের জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা পালানোর কোনো আলামত দেখাতে পারেননি। মাদ্রাসা পরিচালক থানায় সাধারণ ডায়েরিতে শিশুদের পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
নিখোঁজ শিশুরা হচ্ছে- ইসলামপুরের পোড়ারচর সরদারপাড়া গ্রামের মাফেজ শেখের মেয়ে মীম আখতার, সভুকুড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে মনিরা আক্তার ও দক্ষিণ সভুকুড়া গ্রামের সুরুজ জামানের মেয়ে সূর্যবানু। স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, এই মহিলা মাদ্রাসাটি হঠাৎ করেই খোলা হয়েছে এলাকার একটি জমি ভাড়া নিয়ে। মাদ্রাসার পরিচালক পাশের একটি জেলা থেকে এসেছেন। এলাকার মানুষ অনেক বেশি ধর্মভীরু। মেয়ে সন্তানদের তারা মাদ্রাসায় পড়াতে অনেক বেশি আগ্রহী। এ কারণে মাদ্রাসায় ছাত্রী পেতে সমস্যা হয়নি।
রেডিওটুডে নিউজ/এসআই/জেএফ