রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের নিম্নাঞ্চল। তুমুল বৃষ্টিতে যে যেখানে পেরেছেন আশ্রয় নিয়েছেন সকাল পর্যন্ত চলে টানা বৃষ্টিপাত। বৃষ্টির কারণে সিলেট নগরের বেশির ভাগ এলাকা ডুবে গেছে। রাস্তাঘাট ডুবে বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে পানি।
ঈদের আয়োজন, কোরবানির প্রস্তুতি রেখে মানুষ এখন ব্যস্ত ঘরের আসবাব রক্ষায়। হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে হতভম্ব মানুষ ছাড়ছে কেবল দীর্ঘশ্বাস।
সোমবার (১৭ জুন) ভোরে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নগর এলাকার শাহজালাল উপশহর, দরগামহল্লা, পায়রা, সুবিদবাজার বনকলাপাড়া, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, মেডিক্যাল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপার, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহি ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, মাছিমপুর, জামতলা ও তালতলা এলাকায় পানি থইথই করছে। রাস্তাঘাট কোথায় হাঁটু পর্যন্ত, কোথাও কোমর পর্যন্ত ডুবে আছে। অনেক এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি ডুবে ঈদের সকালে দারুণ ভোগান্তিতে রয়েছেন মানুষ।
গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরদিন রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৪১ মিলিমিটার। ভারতের চেরাপুঞ্জি কিংবা মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত বেশি হলে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে সিলেটে। কয়েক দিন ধরে সেখানে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেটে এমন টানা ভারি বর্ষণ বড় বন্যার শঙ্কা জাগাচ্ছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যায়, নগরের চৌকিদেখি এলাকা পানিতে থইথই করছে। কাউন্সিলরের বাসার ভেতর প্রায় এক ফুট পানিতে ডুবে আছে।
বাসিন্দারা জানান, তার বাসার ভেতর ভোর ৪টার দিকে পানি ঢোকে। এখন প্রায় কোমর সমান পানিতে ঘরের খাট, সোফাসহ আসবাবপত্র ডুবে আছে। তারা জানান, রাত ৩টার আগেই উপশহর এলাকার বিভিন্ন ব্লক পানিতে ডুবে গেছে। বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে ঈদের আগের রাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে মানুষকে।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের খবরে বলা হয়েছে, সিলেটে রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয় জানিয়েছে, সিলেটে তিন পয়েন্টে নীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৯ পয়েন্ট ওপর দিয়ে, ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার এবং জৈন্তাপুরের সারিঘাটে সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম