
রাঙামাটিতে কলাগাছের আঁশ দিয়ে তৈরি হয়েছে পরিবেশবান্ধব পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন। গতকাল রোববার শহরের সাবারাং রেস্তোরাঁ মাঠে এই পণ্যের প্রদর্শনী হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উইমেন্স এডুকেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (উইভ) কলাগাছের আঁশ দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করেছে। এতে সহযোগিতা করেছে আরএসএফ সোশ্যাল ফাইন্যান্স।
দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ। এ সময় তিনি বলেন, কলাগাছের তন্তু বা সুতা দিয়ে নারীদের পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির মাধ্যমে পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার সুযোগ পাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আরএসএফ সোশ্যাল ফাইন্যান্সের সহযোগিতায় এক বছর মেয়াদি পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রকল্প হাতে নেয় উইভ। দীর্ঘ গবেষণা ও স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নারী ও কিশোরীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে সফলতা পায় সংস্থাটি। এ স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির মূল উদ্দেশ্য কম দামে পাহাড়ে নারী ও কিশোরীদের মাঝে পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছে দেওয়া।
গতকাল অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কর্মকর্তা সাচিং প্রু মারমা, নারীনেত্রী টুকু তারুকদার, আইনজীবী সুস্মিতা চাকমা, উইভের নির্বাহী পরিচালক নাউপ্রু মারমা।
উইভের নির্বাহী পরিচালক নাউপ্রু মারমা বলেন, ‘পাহাড়ে কলাগাছের সহজলভ্যতা রয়েছে। অনেক গবেষণা করে কলাগাছের আঁশ দিয়ে প্রথমবারের মতো আমরা পনুঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করেছি। বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে দেখেছি নারী ও কিশোরীরা মাসিকের সময় কষ্ট পায় এবং বাজার থেকে ন্যাপকিন ক্রয় করাও সম্ভব হয় না তাদের। ইতোমধ্যে এ ন্যাপকিন বিনামূল্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়েছে। একটি ন্যাপকিন চার থেকে পাঁচবার ব্যবহার করা যায়। আমরা এটি তিন-চারটি স্কুলে দিয়েছি। সেখান থেকে ভালো ফিডব্যাক পেয়েছি। কারণ স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এই স্যানিটারি ন্যাপকিনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ কলাগাছের আঁশ অর্গানিক ও পরিবেশবান্ধব। এর সুতা আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা গেলে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম