প্রিজন ভ্যানে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনের রাস্তায় প্রিজন ভ্যানে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইনু প্রিজনভ্যানে উঠে দাঁড়িয়ে থাকায় দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য আপত্তি জানান। ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না।’
এ সময় ইনু বলেন, ‘আমি দাঁড়িয়ে থাকবো, কী করবেন আপনি? কী আইনে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবো না? আপনি অর্ডার দেখান।’ এ নিয়ে দুজনের মধ্যে আরও কিছু সময় বাক্যবিনিময় হয়। পরে ইনু বলেন, ‘আপনি সিনক্রিয়েট করছেন কেন? অর্ডার নিয়ে আসেন।’ এরপর বিব্রত পুলিশ সদস্য পেছনের অংশে গিয়ে বসে পড়েন।
সোমবার মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও দুদক তা দাখিল করতে না পারায় আগামী বছর ২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পর এ বিষয়ে আদেশ দেন।
এর আগে এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ইনুকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তবে মামলার শুনানিতে তাকে এজলাসে তোলা হয়নি। হাজিরা শেষে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে হাজতখানা থেকে বের করে প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। প্রিজনভ্যান আদালত প্রাঙ্গণে থাকা পর্যন্ত ইনুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভ্যানের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় তাকে। পরে সেই পুলিশ সদস্য আবার ইনুর পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ইনুর বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগও আনা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তার স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক বলছে, হাসানুল হক ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

