ছন্দময় ভঙ্গিতে ধীর লয়ে দল বেধে সাফারী পার্কের ভেতর ঘুরে বেড়াতো জিরাফগুলো। কখনো কখনো দৌঁড়াতো গাছ পালায় আচ্ছাদিত প্রশস্ত প্রান্তরে। সামনের দু’পা এক সঙ্গে ও পেছনের দু’পা একসঙ্গে চলা জিরাফের দৌড়াদৌড়ি দৃশ্যও ছিল উপভোগ্য। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ইন্দ্রবপুর এলাকায় গড়ে ওঠা সাফারী পার্কে এক সময় ১৬ সদস্যের জিরাফ পরিবারের চঞ্চলতা বাড়তি আনন্দ দিতো দর্শনার্থীকে। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে গাজীপুর সাফারী পার্ক থেকে একেবারেই বিলিন হলো জিরাফের অস্তিত্ব। ধুকে ধুকে বেঁচে থাকা সর্বশেষ জিরাফটিও মারা গেছে।
জানা গেছে, টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী জিরাফটি বৃহস্পতিবার মারা যায়। তবে কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ জিরাফের মৃত্যুর খবরটি গোপন রাখে। সাফারী পার্ক থেকে জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় শনিবার সকালে।
গাজীপুর সাফারি পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক তারেক রহমান সমকালকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বেঁচে থাকা একমাত্র জিরাফটি টিবি আক্রান্ত ছিল। জিরাফটিকে সুস্থ করতে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সেটাকে বাঁচানো গেল না। বৃহস্পতিবার রাতে শেষ জিরাফের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ময়নাাতদন্ত শেষ করে পার্কের ভেতরেই জিরাফটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একেবাইরেই জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হলো সাফারী পার্কে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, জিরাফ মারা যাওয়ার পরপরই পার্ক কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩ সালে সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক প্রাণী বিপণন প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি জিরাফ আনা হয়। পরে উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় এসব জিরাফ থেকে জন্ম হয় আরও ৪টি জিরাফের। এর মধ্যে যদিও ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কমন ইল্যান্ডের গুতোয় আহত হয়ে একটি ও পরে ২০১৯ সালে জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকটি জিরাফসহ মোট ১৩টি জিরাফের মৃত্যু হয়। এরপর বেঁচে থাকা আরও দু’টি জিরাফ মারা যায়। সর্বশেষ টিকে থাকা স্ত্রী জিরাফটিও মারা গেছে বৃহস্পতিবার।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

