ভারতের ওড়িশা রাজ্যে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের এক মুসলিম নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শ্রমিকের নাম জুয়েল রানা (১৯)। এসময় তার দুই সহকর্মীকেও মারধরের শিকার হন। তারা এখন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। খবর বিবিসি বাংলার।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ওড়িশার সম্বলপুর জেলায় স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহত যুবক পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের সুতি অঞ্চলের বাসিন্দা। মাত্র পাঁচদিন আগে তিনি বাড়ি থেকে কাজ করতে ওড়িশা গিয়েছিলেন।
তার দুই সহকর্মী গণমাধ্যমকে বলেছেন, দুষ্কৃতকারীরা তাদের ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করে পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিল।
ভারতের একটি শ্রমিক সংগঠন বলছে, কেন্দ্রীয় সরকার ‘বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গা’ ধরার যে বিশেষ প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তারই ফলশ্রুতিতে দেশটির বাংলাভাষী মুসলমানরা একের পর এক বাংলাদেশি সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হচ্ছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নির্মাণ শ্রমিক পল্টু শেখ বলেন, ‘জুয়েল আর বাকি দুজন ঘরে রান্নাবান্না করে খেয়ে বিড়ি খেতে বাইরে বের হয়েছিল। প্রথমে এসে ওদের কাছ থেকে বিড়ি চায় স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। বিড়ি চাওয়ার পরেই তারা সন্দেহ করে জুয়েলরা তিনজন বাংলাদেশি কিনা, আধার কার্ড দেখতে চায়। একজন আধার কার্ড আনতে ঘরে গেছে, এরমধ্যেই মারধর শুরু করে দেয় ওই স্থানীয় লোকেরা।’
সম্বলপুর মহকুমার পুলিশ অফিসার তোফান বাগও একই বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ‘তিনজন শ্রমিক বিড়ি খাচ্ছিলেন। সেই সময়ে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা সেখানে গিয়ে আধার কার্ড দেখতে চায়। তারপরেই তিনজনকে মারধর করে। একজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তার (জুয়েল রানা) দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে এবং পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।’
বিবিসি জানিয়েছে, চলতি মাসেই ভারতের তিনটি রাজ্যে গণপিটুনিতে মৃত্যুর তিনটি ঘটনা সামনে এসেছে। এর মধ্যে বিহারে একজন মুসলমান ফেরিওয়ালা তার ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে গণপিটুনির শিকার হয়ে হাসপাতালে মারা যান। তিনি ছত্তিশগড় থেকে কেরালায় কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া কেরালায় একজন দলিত শ্রেণীর হিন্দুকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে পিটিয়ে মারা হয়। এবার ওড়িশায় একইভাবে জুয়েল রানা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

