শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৪,

৬ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

স্মৃতিতে এন্ড্রু কিশোর

হায়রে মানুষ, রঙ্গীন ফানুস

রেডিও টুডে ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২:৪৬, ৭ জুলাই ২০২১

আপডেট: ০৩:০২, ৭ জুলাই ২০২১

Google News
হায়রে মানুষ, রঙ্গীন ফানুস

এন্ড্রু কিশোর

হায়রে মানুষ, রঙ্গীন ফানুস, দম ফুরাইলেই ঠুস! গানটি গেয়ে যিনি এই নশ্বর জীবনের স্থায়িত্বকে নানান উপমায় শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরেছিলেন, গত বছরের এই দিনে তার দমটাও ফুরিয়ে যায়। বলছিলাম কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের কথা। দীর্ঘ ১০ মাস ক্যানসারের সঙ্গে লড়ে ২০২০ সালের আজকের দিনে কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

তার পুরো নাম এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ, জন্ম ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে। মাত্র ৬ বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন কিশোর। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি নিজ জেলাতেই বেতারে নজরুল, রবীন্দ্র, লোকসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান শাখায় তালিকাভুক্ত হন।

১৯৭৭ সালে মেইল ট্রেন চলচিত্রে "অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ" গানের মাধ্যমে তার চলচিত্রের সঙ্গীতে পদার্পণ। এরপর ১৯৮২ সালে বড় ভাল লোক ছিল চলচিত্রে শামসুল হকের গীত ও আলম খানের সুরে তার সর্বকালের সারাজাগানো "হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস" গানটি তাকে দারুণ খ্যাতি এনে দেয়। গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে এন্ড্রু কিশোর প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮৪ সালে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের গীত ও সুরে নয়নের আলো চলচ্চিত্রের তিনটি জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দেন, সেগুলো হল "আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি", "আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন" ও "আমার বুকের মধ্য খানে"। এই গানগুলোর সুর এখনও শ্রোতাদের বিমোহিত করে তুলে। 

এরপর তিনি সারেন্ডার (১৯৮৭), ক্ষতিপূরণ (১৯৮৯), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), কবুল (১৯৯৬), আজ গায়ে হলুদ (২০০০), সাজঘর (২০০৭) ও কি যাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রের গানের জন্য আরও সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি পাঁচবার বাচসাস পুরস্কার ও দুইবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।

বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেয়ায়র জন্য 'প্লেব্যাক সম্রাট' নামেও পরিচিত এই কিংবদন্তি। 

২০২০ সালের ৬ জুলাই ৬৪ বছর বয়সে চির নিদ্রায় শায়িত হন এই গুণী ব্যক্তিত্ব। নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছিলেন। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করেও ক্যান্সার নির্মূল হয়নি প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পীর। চিকিৎসক হাল ছেড়ে দিলে এই মরণব্যাধি নিয়েই ৯ মাস পর ২০২০ সালের ১১ জুন মাতৃভূমিতে ফেরেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার জন্মস্থান রাজশাহীতেই ছিলেন। 

এন্ড্রু কিশোরের প্রথম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে তার জন্মস্থান রাজশাহীতে আজ মঙ্গলবার দিনব্যাপী অসহায়দের মাঝে খাদ্য বিতরণ করবেন তার স্ত্রী ডা. লিপিকা এন্ড্রু। এছাড়া বিকেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে দেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্র জগতের কালজয়ী গানের জাদুকরের প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভা করে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ।
 

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের