
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক হুঁশিয়ারি এবং রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের ওপর মূল্যছাড় কমে যাওয়ায় রুশ তেল আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত এবং বর্তমানে সমুদ্রপথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হওয়া সত্ত্বেও, বিগত এক সপ্তাহে দেশটির রাষ্ট্রীয় চারটি প্রধান তেল কোম্পানি—
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন (IOC)
হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (HPCL)
ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (BPCL)
ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস (MRPL)
যদিও তারা এপর্যন্ত রাশিয়া থেকে নতুন কোনো তেল ক্রয়ের অর্ডার দিচ্ছে না।
রয়টার্স জানায়, সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাতে এসব কোম্পানি এখন বিকল্প উৎস থেকে তেল সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে। বিশেষ করে আবুধাবির মুরবান ক্রুড এবং পশ্চিম আফ্রিকার তেল আমদানির দিকে ঝুঁকছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো। তবে এ বিষয়ে এসব কোম্পানি কিংবা ভারতের জ্বালানি মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি।
ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৫.২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিশোধনের সক্ষমতা রয়েছে, যার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো এককভাবে ৬০ শতাংশেরও বেশি তেল পরিশোধন করে। যদিও ভারতের বেসরকারি তেল কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও নায়ারা এনার্জি রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে রয়ে গেছে।
রুশ তেল আমদানি বন্ধের পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারিকে। গত ১৪ জুলাই তিনি হুঁশিয়ারি দেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে শান্তিচুক্তি না হলে, রুশ তেল কেনা দেশগুলোর ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
এরপর ৩০ জুলাই রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং রুশ তেল আমদানির জন্য অতিরিক্ত জরিমানার ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প লিখেছেন, ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করছে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। চাইলে তারা এক সঙ্গে নিজেদের মৃত অর্থনীতি ডুবিয়ে দিতে পারে। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব সামান্য ব্যবসা করি। তাদের শুল্কহার বিশ্বে অন্যতম বেশি। একই ভাবে রাশিয়ার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো বাণিজ্য নেই—আমি চাই, এই অবস্থাই থাকুক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই হুমকি ও বাণিজ্য নীতির অনিশ্চয়তার কারণে ভারত স্বল্পমেয়াদে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি অংশীদারিত্বের বিষয়টি পুরোপুরি শেষ হয়ে যাচ্ছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম