
অভিনেত্রীদের মধ্যে মতানৈক্য বা বিবাদ একটি সাধারণ বিষয়, যা প্রায়ই শিরোনামে আসে। এই বিবাদগুলো সাধারণত পারিশ্রমিক, কাজের পরিবেশ, সম্মান, বা বিভিন্ন নীতি-নির্ধারণ নিয়ে হয়ে থাকে। এছাড়া তাদের মধ্যে সবসময় একটা প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। একইসঙ্গে সুযোগ পেলেই একে অন্যের বিরুদ্ধে কথা বলেই থাকে।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ও সোহানা সাবার মধ্যে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভার্চুয়াল বিবাদে জড়িয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ও সোহানা সাবা।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন। ছাত্রদের হয়ে কথা বলতে তিনি রাস্তায় নেমেছিলেন। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হয়েছিলেন তিনি। জুলাই আন্দোলনের এক বছর পার হয়ে গেলেও সমালোচনা পিছু ছাড়েনি বাঁধনের। প্রথমে এ নিয়ে কথা না বললেও এখন প্রতিবাদ করছেন এই অভিনেত্রী।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাঁধনের এক ফেসবুক পোস্টের নিচে রিয়া ঘোষ নামের এক নারীর মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করে বাঁধনকে কটাক্ষ করেন অভিনেত্রী সোহানা সাবা।
ক্যাপশনে লেখেন, এই কমেন্টটা আপু ডিলিট করে দিয়েছেন...মে বি, দিদিটিকে ব্লক করেও দিয়েছেন...ভাগ্যক্রমে আমার টাইমলাইনে ভেসে উঠেছিল । আর আমি তক্ষুনি স্ক্রিনশট নিয়ে রেখেছিলাম।
সাবার শেয়ার করা মন্তব্যের স্ক্রিনশটটিতে লেখা, সারা জীবন ড্রামাবাজি মেরে এসেছে সতী সাজতে।...আপাদমস্তক একটা ফেক মানুষ আপনি। আপনার গোটা পৃথিবীটা আপনাকে কেন্দ্র করে ঘোরে, তাই আপনার প্রতিটা মুহূর্তে অন্যের ভ্যারিডেশনের প্রয়োজন। কী জীবন আপনার। আর করুণাও হয় না আপনাকে দেখে। কত বড়...হলে কেউ কলকাতায় শুটিং করতে এসে নিজের ব্যক্তিজীবনের কেচ্ছা গায়? আপনি কত বড় দুঃখী, সেটা বারবার বলে কী প্রমাণ করতে চান?
এমনকি স্ক্রিনশটটি পোস্ট করেই সাবা থেমে থাকেননি । কমেন্ট বক্সে লিখেছেন, ভেবেছিলাম, স্ক্রিনশট নিয়ে পোস্ট করবো না। ওদের মতো স্ক্রিনশট বেচাকেনা করাটা ঠিক না। পরে দেখলাম, এটা তো পাবলিক পোস্ট, যে কেউই নিতে পারে আর পোস্ট করতে পারে। তাই আমিও পোস্ট করলাম।
সাবার এই পোস্টের কমেন্ট বক্সের ঘরে উঠে এসেছে বাঁধনের বলিউড সিনেমা ‘খুফিয়া’ প্রসঙ্গ। এক নেটিজেনের মন্তব্যের জবাবে সাবা লিখেছেন, বাংলাদেশকে বাজেভাবে রিপ্রেজেন্ট করবে বলে কতজন এই সিনেমাটা করেনি...বাট তিনি সুযোগ হাতছাড়া করেননি তখন।
সোহানা সাবার এমন পোস্টের ঘণ্টাখানেক পর বাঁধন ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার করেন। তিনি লেখেন, আমার কিছু সহকর্মী আমার ওপর ব্যক্তিগতভাবে, নির্মম ও নির্দয়ভাবে আক্রমণ চালাতে শুরু করেছে। তারা ইন্টারনেটের অচেনা মানুষ নয়। সেই সব মানুষ, যাদের সঙ্গে আমি একসময় কাজ করেছি। একসাথে মঞ্চে দাঁড়িয়েছি। যাদের আমি বিশ্বাস করতাম। তাদের কথাগুলো ছিল অমানবিক, উদ্দেশ্য ছিল অপমান করা। তারা আমাকে গালি দিয়েছে, আমি যা কিছুর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম, তারা সবকিছুকে অসম্মান করার চেষ্টা করেছে এবং এখনো তা করছে। তাদের অনেকে আবার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত।
যদিও পোস্টে কারও নাম উল্লেখ না করেনি বাঁধন। তবে পোস্টটি দেখে অনেকে বুঝে নিয়েছেন, এটা সোহানা সাবাকে উদ্দেশ করেই লিখেছেন বাঁধন।
পোস্টে বাঁধন আরও লিখেছেন, ট্রল বা অপরিচিত মানুষদের আক্রমণ নয় বরং আমাকে বেশি কষ্ট দেয়- যারা একসময় আমার পাশে ছিলেন, আমায় চেনেন, তারাই যখন আমার পথ আলাদা হতেই হিংস্র হয়ে উঠলেন। তারা ঘৃণায় এতটাই অন্ধ হয়ে গেছেন, যেন বিষ না উগরে দিলে নিজেরাই দম বন্ধ হয়ে মারা যাবেন।... কী অসুস্থ সমাজে বাস করছি আমরা, যেখানে কারও মত আলাদা হলেই তাকে ছিঁড়ে ফেলা হয়? যেখানে রাজনীতি শুরু হলে মানবতা শেষ হয়ে যায়? এটা হৃদয়বিদারক, ভয়ংকর আর লজ্জার।
শেষ দিকে বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে বাঁধন লেখেন, কাউকে ঘৃণা করা প্রত্যেকের নিজস্ব পছন্দ। আপনি যা ইচ্ছা তাই করুন। আপনার জীবন, আপনার পছন্দ।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম