ইসরায়েলের হামলা চলছেই, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি

সোমবার,

২০ অক্টোবর ২০২৫,

৫ কার্তিক ১৪৩২

সোমবার,

২০ অক্টোবর ২০২৫,

৫ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

ইসরায়েলের হামলা চলছেই, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২০ অক্টোবর ২০২৫

Google News
ইসরায়েলের হামলা চলছেই, হুমকির মুখে যুদ্ধবিরতি

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় ১০ অক্টোবর। কিন্তু ইসরায়েল বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। শান্তিচুক্তির পর দখলদার বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। চুক্তি লঙ্ঘনে দুপক্ষ পরস্পরকে দোষী সাব্যস্ত করছে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনে হামাসকে দায়ী করেছে।

হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, ইসরায়েল অন্তত ৫০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েলও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এসব ঘটনায় যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে পড়েছে। ইসরায়েলের মন্ত্রীদের কয়েকজন গাজায় ফের যুদ্ধ শুরুর হুমকিও দিয়েছেন। ইতোমধ্যে রাফা ও দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। আলজাজিরা ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। 

রয়টার্স জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী গাজার উল্লেখযোগ্য অংশের ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে শুরু করেছে। তারা এখন ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মোকাবিলায় ব্যস্ত। গাজা শহরের পূর্বাঞ্চলে এবং রাফায় হামাসের সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এসব এলাকা ইসরায়েল সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর শক্ত ঘাঁটি ছিল। এসব অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে ত্রাণবাহী ট্রাক ছিনতাই করার অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া গাজার ভঙ্গুর নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে সশস্ত্র গ্রুপগুলো। 

গতকাল রোববারও রাফা শহরে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী ইসরায়েলি গ্রুপগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জড়ায়। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস তাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েল রাফা ও দক্ষিণ গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে। 

বন্ধ হলো রাফা ক্রসিং

এরই মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী রাফা ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। এই ক্রসিং দিয়ে গাজা থেকে মিসরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন বাসিন্দারা। গত শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নিহত জিম্মিদের দ্রুত হস্তান্তরের ওপর নির্ভর করেছে রাফা ক্রসিংয়ের ভবিষ্যৎ। এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, রাফা ক্রসিং বন্ধে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।  

গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে আরও দুটি মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস। জিম্মি চুক্তির অধীনে ২৮টি মৃতদেহের মধ্যে ১২টি হস্তান্তর করেছে তারা। গতকালও ১৫ মরদেহ ফেরত দেয় ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনের মৃতদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। গত দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় ৬৮ হাজার ১৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ৭০ হাজার ২০৩ জন আহত হয়েছেন। 

গাজার প্রশাসনিক সরকার গঠন এখনও অনিশ্চিত  

ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় একটি প্রশাসনিক সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে ব্যাপারে তেমন অগ্রগতি হয়নি। কাতার ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক হায়াজনেহ আলজাজিরাকে বলেন, গাজার জন্য কীভাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে এবং কারা এটি পরিচালনা করবে, তা এখনও অনিশ্চিত। হামাস গত ২০ বছর ধরে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে। তারাই সবকিছু চালায়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বসালে মূলত তাদের অনুগত আমলাতন্ত্র বসাতে চেষ্টা করবে। 

নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী 

গাজার সরকার নগদ প্রত্যাহার কমিশনের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে বাসিন্দাদের কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেশি। আলজাজিরা জানাচ্ছে, গাজার বাজারগুলো ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে এবং আবার উন্নতি করছে। আমনা আল-দাহদুহ নামের এক বাসিন্দা বলেন, দেইর আল-বালাহের কেন্দ্রীয় বাজার থেকে পণ্য কেনা রীতিমতো একটি সংগ্রাম। কয়েক মাস বিক্রি করার কিছু না থাকার পরে বাজারের বিক্রেতারা আবার ব্যবসায় মন দিয়েছেন। মোসা আফানা নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, পণ্য বিক্রি করতে পেরে এখন স্বস্তি পাচ্ছেন। তবে বাজার স্বাভাবিক হতে এখনও অনেক দেরি। আমরা আশা করছি, বিশ্বনেতারা গাজায় নগদ প্রবাহ সংকট দূর করতে পদক্ষেপ নেবেন। 

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের