ইমরান খানকে নিয়ে ‘কিছু গোপন করা হচ্ছে’

সোমবার,

০১ ডিসেম্বর ২০২৫,

১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

সোমবার,

০১ ডিসেম্বর ২০২৫,

১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

Radio Today News

ইমরান খানকে নিয়ে ‘কিছু গোপন করা হচ্ছে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

Google News
ইমরান খানকে নিয়ে ‘কিছু গোপন করা হচ্ছে’

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ছেলেরা আশঙ্কা করছেন, কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকার কোনো প্রমাণ না দিয়ে তার অবস্থা সম্পর্কে 'অপরিবর্তনীয় কিছু গোপন করা হচ্ছে'। সোমবার (১ ডিসেম্বর) ইমরান খানের এক ছেলেকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এমনটা জানিয়েছে।

আদালতের নির্দেশে কারাগার পরিদর্শন বন্ধ থাকায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ছেলে কাসিম খান রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সাপ্তাহিক সাক্ষাতের জন্য আদালতের আদেশ সত্ত্বেও ইমরান খানের সঙ্গে পরিবারের কোনো সদস্যের সরাসরি বা যাচাইযোগ্য যোগাযোগ হয়নি।

তিনি লিখিত মন্তব্যে বলেন, 'কয়েক মাস ধরে স্বাধীনভাবে কোনো নিশ্চিত যোগাযোগ ছিল না। আপনার বাবা নিরাপদ আছেন কিনা, নাকি আহত, এমনকি বেঁচে আছেন কিনা, তা না জানা এক ধরণের মানসিক নির্যাতন।'

কাসিম বলেন, 'আজ তার অবস্থা সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো যাচাইযোগ্য তথ্য নেই। আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হলো, আমাদের কাছ থেকে এমন কিছু লুকানো হচ্ছে, যা অপরিবর্তনীয়।'

তিনি আরও বলেন, পরিবার বারবার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ারও অনুমতি চেয়েছে। এই চিকিৎসক এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাকে পরীক্ষা করার অনুমতি পাচ্ছেন না।

রয়টার্স জানিয়েছে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কারা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন। তবে তাকে উচ্চ-নিরাপত্তা কেন্দ্রে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

৭২ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ২০২২ সালের সংসদীয় ভোটে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর 'রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত' একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

তার প্রথম দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রাপ্ত উপহার অবৈধভাবে বিক্রি করার অভিযোগের ভিত্তিতে, যা 'তোশাখানা' মামলা নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত।

পরবর্তী রায়ে দীর্ঘ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁসের অভিযোগে ১০ বছর এবং আল-কাদির ট্রাস্টের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি পৃথক দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছর।

ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলেছে, মামলাগুলোর লক্ষ্য তাকে জনজীবন থেকে দূরে রাখা এবং নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া।

তথ্যের অভাবে পারিবারিক উদ্বেগ আরও তীব্র হয়েছে

পরিবারটি বলছে, যোগাযোগের অভাবের কারণে ইমরানকে জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে ঠেলে দেওয়ার ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে বলা হয়েছে, যেন ইমরানের নাম বা ছবি ব্যবহার না করা হয়। কারাদণ্ডের পর থেকে তাকে ইন্টারনেটে কেবল আদালতে থাকা অবস্থায় এক ঝলক দেখা গিয়েছিল।

ছেলে কাসিম বলেন, 'এই বিচ্ছিন্নতা ইচ্ছাকৃত। কর্তৃপক্ষ তারা তাকে ভয় পায়। তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা এবং তারা জানে, তারা তাকে গণতান্ত্রিকভাবে পরাজিত করতে পারবে না।'

কাসিম এবং তার বড় ভাই সুলেমান ঈসা খান তাদের মা জেমিমা গোল্ডস্মিথের সঙ্গে লন্ডনে থাকেন। তারা পাকিস্তানের বংশীয় রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন।

কাসিম আরও বলেন, তারা শেষবার তাদের বাবাকে দেখেছিলেন ২০২২ সালের নভেম্বরে, যখন তারা পাকিস্তানে গিয়েছিলেন।

কাসিম বলল, 'সেই ছবিটা তখন থেকেই আমার মনে গেঁথে আছে। আমাদের বাবাকে ওই অবস্থায় দেখা এমন একটা জিনিস, যা তুমি কখনো ভুলতে পারবে না। আমাদের বলা হয়েছিল যে, তিনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে উঠবেন। এখন কয়েক সপ্তাহের সম্পূর্ণ নীরবতা এবং জীবনের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার পর, সেই স্মৃতির ওজন অন্যরকম...।'

তিনি বলেন, পরিবারটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে আবেদন করার মতো অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উপায় অনুসরণ করছে। আদালতের নির্দেশে অবিলম্বে প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার চাইছে।

কাসিম বলেন, 'এটি কেবল একটি রাজনৈতিক বিরোধ নয়, এটি একটি জরুরি মানবাধিকার অবস্থা। চাপ অবশ্যই সকল দিক থেকে আসতে হবে। আমরা তার কাছ থেকে শক্তি পাই, কিন্তু আমাদের এটা জানা দরকার যে, তিনি নিরাপদ।'

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের