
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের রায় বহাল থাকায় সন্তুষ্টি জানিয়েছেন তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় ঐতিহাসিক। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই সব প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত যেন রায়টা কার্যকর করা হয়।’
আজ সোমবার (২ জুন) হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রত্যেককে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই। আজকের রায় একক বিষয় না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, সবার দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে হয়তো এই রায়টা বহাল রয়েছে। যেটাকে সত্যের জয় বলবো আমি।
মেজর সিনহার বোন আরও বলেন, আমরা অপেক্ষা করছি পরবর্তী ধাপের জন্য। যখন পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন হবে এবং এই রায়টা কার্যকর হবে-সেদিন আমরা বলবো, আমরা সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট।
শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস আরও বলেন, বিজ্ঞ আদালতের ওপরে আমাদের ভরসা রয়েছে। যেহেতু আমরা আপিল করেছি, আসামি পক্ষ আপিল করবে-এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বিজ্ঞ আদালত যাচাই-বাছাই করে রায়টা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা অসন্তুষ্ট আমরা বলবো না। যে রায় হয়েছে, এটা নিয়ে সন্তুষ্ট। কিন্তু আমরা রায় কার্যকরের জন্য অপেক্ষা করবো। আমরা চাইবো দ্রুত অ্যাপিলেট ডিভিশনে বিষয়টা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬ আসামির যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামির ৫০ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ বহাল রাখা হয়েছে রায়ে।
যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার সাবেক এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, সাগর দেব, কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।
আসামিদের আপিল খারিজ করে সোমবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান রায়ের মূল অংশ পাঠ করে শোনান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারল শামীমা দিপ্তী, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম সরকার, সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ ও লাবনী আক্তার।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম