
বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ সংগ্রাম এবং ত্যাগের পরবর্তী সরকারের সামনে কঠিন এক চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে, বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি মনে করেন, জনগণের সংস্কারের দাবি উপেক্ষা করা সহজ হবে না, বিশেষ করে এমন পরিস্থিতিতে যেখানে গণ-অভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষের জীবন ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারানো হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া নিয়ে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এ কথা বলেন ড. আসিফ নজরুল। সভায় বক্তব্য দেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফসহ প্রমুখ।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে হাজারের বেশি মানুষের জীবন ও হাজার হাজার মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারানোর পর পরবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসবে। বাংলাদেশের জনগণ কখনো রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এত ত্যাগ শিকার করেনি। তাই তাদের প্রত্যাশা উপেক্ষা করা পরবর্তী সরকারের পক্ষে সহজ হবে না।’
‘অনেক রক্ত ঝরার পর সংস্কার করা না গেলে আগামী দুই দশকেও আর সংস্কার করা যাবে না’, বলেন আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগে রাজনৈতিক সরকারের কিছু প্রভাব থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, অনেক সময় দেখা যায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ কাঠামো যে আইন করে, পরবর্তীকালে রাজনৈতিক সরকার এসে সংকীর্ণ স্বার্থে তা বাতিল করে দেয়।
এই ধরনের চর্চা রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে তোলে।’ এই পুনরাবৃত্তি রোধ করতে এবং আইনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে নতুন আইন চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নিম্ন আদালতে এমন অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় যে সরকারি উকিল হওয়া সত্ত্বেও অনেকে আর্থিক প্রলোভনে পড়ে প্রতিপক্ষের হয়ে কাজ করেন। এটি বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে প্রস্তাবিত ‘সরকারি অ্যাটনি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’ কার্যকর হলে এই সমস্যার সমাধান হবে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ফিরে আসবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম