
জুলাই-আগস্ট ইলিশের ভরা মৌসুম। মৌসুমের শুরুতে সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীসহ সারা দেশে ইলিশের দাম ছিল চড়া। তবে আগস্টের মাঝামাঝি এসে সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে, দামও নেমেছে কয়েকশ টাকা। তবুও ইলিশের স্বস্তি ঢেকে দিয়েছে অন্য নিত্যপণ্যের বাজারে দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির চাপ।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর উত্তর বাড্ড ও আলীর মোড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দোকানভেদে কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এই দাম ছিল ৩ হাজার টাকা বা তার বেশি। মধ্য বাড্ড বাজারে বড় ইলিশ মিলছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়, জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, চট্টগ্রামের ইলিশ তুলনামূলক সস্তা হলেও পদ্মার ইলিশের দাম বেশি। এই সপ্তাহে মাছ প্রচুর, তবে ছোট ইলিশ বেশি। ক্রেতারা অবশ্য মনে করছেন, দাম আরও কমা দরকার।
মৌসুমের মাঝামাঝি ডিমের বাজারে এসেছে বড় ধরনের ধাক্কা। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫-১৫০ টাকায়, সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। হাঁসের ডিম ২৩০-২৪০ টাকা ডজন।
মুরগির দামও বাড়তি, ব্রয়লার ১৭০ টাকা কেজি, সোনালি ৩২০-৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০-৭০০ টাকা। খামারিরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে খামার থেকে সরবরাহ কমে গেছে, আর বিক্রেতারা দিচ্ছেন চাহিদা বৃদ্ধির অজুহাত।
কারওয়ান বাজার, রামপুরাসহ ঢাকার প্রায় সব কাঁচাবাজারেই সবজির দাম সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে ১০-২০ টাকা কেজিতে। এখন ঝিঙা, চিচিঙ্গা, বরবটি, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, বেগুন সবই ৮০-১০০ টাকার আশপাশে। বেগুনের কেজি ১০০-১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা, গাজর ১৪০-১৬০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা পিস।
বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেত তলিয়ে গেছে, গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়েছে। পাইকারি দামের এই বৃদ্ধি সরাসরি খুচরা বাজারে পড়ছে।
গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ৩০ টাকা। এখন দেশি পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৫০-৫৫ টাকা। এলাচের দাম ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫০-৬০০ টাকায়, আদা ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০-২৫০ টাকায়, রসুন ১৬০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা বলছেন, মৌসুম শেষের দিকে, তার ওপর টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দাম বাড়ছে।
মোটা চালের দাম এখন কেজিতে ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬৫-৭০ টাকা, ভালো মানের ব্র্যান্ড চাল ৯০-১০০ টাকার কাছাকাছি। দেড় মাস ধরে চালের দাম স্থিতিশীল হয়নি।
বাড্ড নতুন বাজারে সবজি কিনতে আসা গৃহিণী শশি আক্তার বরেন, ‘এক হাজার টাকা নিয়েও তেমন কিছু কেনা যায় না।’ ব্যাংক কর্মকর্তা শাকিল বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই দাম বাড়ানোর সুযোগ নেয় অনেকে।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম