শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪,

৭ বৈশাখ ১৪৩১

শনিবার,

২০ এপ্রিল ২০২৪,

৭ বৈশাখ ১৪৩১

Radio Today News

বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না: হানিফ

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:৪৫, ২০ আগস্ট ২০২২

Google News
বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না: হানিফ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপির আন্দোলনে দেশের মানুষ সাড়া দেয়নি তাই এখন তারা বিদেশি প্রভুর কাছে ধরনা দিচ্ছে। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দূতাবাসে দূতাবাসে ধরনা দিচ্ছেন। এই দেশে আইন আদালত আছে। বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় আসতে হবে।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগষ্টের সকল শহিদের স্মরণে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার আছে কি-না এমন প্রশ্ন রেখে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে পাকিস্তানি আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলো। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছে। ৭ মার্চ ভাষণ, জয় বাংলা নিষিদ্ধ করা করেছে। পাকিস্তান জিন্দাবাদের আদলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ নিয়ে এসেছিলো।

জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলো। দালাল আইন বাতিল করে রাজাকার, আরবদর মুক্ত করে দিয়েছিলো। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে দেশে ফিরিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যায় সরাসরি ভূমিকা রাখা জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলো। জিয়া মুক্তিযোদ্ধা হলে তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দিতেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না বলেই এসব কাজ করেছেন। জিয়াউর রহমান সব কাজ পাকিস্তানের নির্দেশে করেছেন বলেন তিনি।

বাংলাদেশে রাজনীতিতে দু’টি ধারা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আর আরেকটি হলো বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী প্লাটফর্ম। এই ধারা পাকিস্তানের নির্দেশে চলে। তারা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে। তারাই দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলো। আর এখন নির্লজ্জ বেহায়ার মতো কথা বলছে।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের মানুষকে কি দিয়েছিলো এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তারা খুন, হত্যা, জঙ্গীবাদ দিয়েছিলো। বিএনপি দেশকে জঙ্গীবাদের রাষ্ট্র বানিয়েছিলো। সন্ত্রাসী তারেক রহমান দেশে ১২৫টি জঙ্গীগোষ্ঠী তৈরি করেছিলো। উগ্র, মৌলবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। সেই তালেবানি জঙ্গীরাষ্ট্র থেকে উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে গেছেন।

তারেক রহমান লণ্ডনে বসে আয়েশি জীবনযাপন করার উৎস জানতে চেয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে হাওয়া ভবন বানিয়ে দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে। লুটপাটের সেই সম্পদ দিয়ে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছে। আর আজ তারা (বিএনপি) সরকার বিরুদ্ধে সমালোচনা করে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার আগে তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পূর্ব পকিস্তানকে সকল ক্ষেত্রে পশ্চিম পাকিস্তান বঞ্চিত করছিলো। বাজেটের ৮০ ভাগ ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য আর পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ছিলো মাত্র ২০ ভাগ। বঙ্গবন্ধু শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ করেছেন। তখনই তিনি বাঙালির মুক্তির জন্য স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতে পুরো দেশ ছষে বেড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান শাসনামলের ২৩ বছরের মধ্যে জীবনের শ্রেষ্ট সময় প্রায় ১৪ বছর কারাগারে ছিলেন। তবুও বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কখনো পিছপা হননি। তার লক্ষ্য ছিলো স্থির। তার নেতৃত্বে যুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি।

হানিফ বলেন, ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু ৯ মাসের মধ্যে সংবিধান দিয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে দেশ পুনর্গঠন করে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিন। যাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম সেই পাকিস্তান ও তাদের মিত্র রাষ্ট্র একাত্তরের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি। তাই প্রতিশোধ নিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ লাখ শহিদের আত্মাকে পদদূলিত করা হয়েছিলো।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ১৯৪৮ সালে দ্বিজাতিতত্তের ভিত্তিতে দু’টি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর জিন্নাহসহ পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা বলেছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। তাদের কাছে আমাদের ভাষার কোনো মূল্য নেই। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই সময়ে বেশিরভাগ ছিলো কৃষক পরিবার। অল্প শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত। মানুষ অধিকার সম্পর্কে সচেতন ছিলো না। তাদেরকে রাজপথে নামানো কঠিন ছিলো। তিনি জানতেন ছাত্রসমাজ জাগ্রত, সচেতন সমাজ হিসেবে স্বীকৃত। তাই মানুষের অধিকার জাগিয়ে তোলার জন্য তিনি ছাত্রলীগ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ অত্যন্ত সুশৃঙ্খল সংগঠন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আর এজন্য ছাত্রলীগকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, আ. ক. ম. সরোয়ার জাহান বাদশা এমপি, ব্যারিস্টার সেলিম এমপি, উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও শহরে আওয়ামীলীগের  সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. আতিকুর রহমান ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ ।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের