
কবি ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে টালবাহানা করছে। তারা বিভিন্ন এলিট কমিশন গঠন করে সবার মন ভোলানোর চেষ্টা করছে। এসব জনগণ বোঝে। তাই টালবাহানা না করে দ্রুত জুলাই ঘোষণা দিতে হবে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।’ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসিকে আওয়ামী স্বৈরাচারমুক্ত করার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে ফ্যাসিস্টবিরোধী জুলাই নেটওয়ার্ক।
সমাবেশে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই আপনারা গণঅভ্যুত্থানের সরকার। আপনাদের প্রথম কাজ জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু আপনারা এই ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে এখনও কোনো প্রক্রিয়া শুরু করেননি, টালবাহানা করছেন। বিভিন্ন এলিট কমিশন গঠন করে আমাদের মন ভোলানোর চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের জনগণের এটা বোঝার মতো বুদ্ধি রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মানে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নমূলক সব আইন এবং প্রতিষ্ঠানকে হয় বিলুপ্ত করতে হবে, না হয় বদলাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দাবিতে যখন আন্দোলন তৈরি হচ্ছে, তখন আপনারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তরুণদের বিরুদ্ধে নানা রকম প্রচারণা চালাচ্ছেন। আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। আপনাদের এজেন্সি ছাত্রদের মধ্যে বিভক্তি তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আপনার ভাববেন না, এটা বোঝার মতো কাণ্ডজ্ঞান জনগণের নেই। ছাত্রদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে যেসব এজেন্সি কাজ করছে আমরা তাদের চিনি। তাদের বলব, জনতার কাতারে দাঁড়াতে। ছাত্রদের বলব, তথাকথিত মতাদর্শিক তর্ক করে নিজেদের মধ্যে বিরোধ বাড়াবেন না। এটা ফ্যাসিস্টদের কৌশল।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আন্দোলন জারি রাখা। এজন্য অবিলম্বে জুলাই ঘোষণার ওপর সবার জোর দিতে হবে। মনে রাখবেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে, ক্ষমতার অন্দরমহলে, যেসব প্রাসাদ তৈরি করেছে তা যদি ৩২ নম্বরের মতো গুড়িয়ে দিতে না পারি তা হলে আগামী দিনে বাংলাদেশের জনগণের কপালে অনেক দুঃখ আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের শিথিলতা আমাদের অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় তাদের শিথিলতা বাংলাদেশকে বিপজ্জনক জায়গায় ঠেলে দিচ্ছে। আমরা ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত করেছি কিন্তু তার আরোপিত সংবিধান এখনও বাতিল করতে পারিনি। ঠিক তেমনি টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতকে এখনও ফ্যাসিস্ট শক্তির কাছ থেকে মুক্ত করতে পারিনি।’
তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি খাতকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, ইন্টারনেট বন্ধ করে ও সামাজকি যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করে যারা শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল তারা এখনও বহাল আছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে, এটাকে আমরা সমর্থন করি। এখন আপনাদের (সরকার) কাজ হলো ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগী ইন্টারনেট ও টেলিকম প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা। এক সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে আমরা বিটিআরসির সামনে অবস্থান নেব।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম