
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাবি'র কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ছাত্রদল প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান বলেছেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে একজন হেভিওয়েট ভিপি প্রার্থী মধ্যরাতে হলগুলোতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। উনি হল প্রভোস্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আইন পরিপন্থী ঘটনা ঘটিয়ে যদি ক্ষমা চান, তাহলে অন্যান্য প্রার্থীরাও ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডায়নোসর যুগের আইন মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটি মেয়ে তার বৈধ আইডি থাকার পরও সে ইচ্ছা করলে তার আরেক বান্ধবীর রুমে যেতে পারে না, হলে যেতে পারে না। এরই মধ্যে দেখতে পেলাম এই আইনটি শিথিল করা হয়েছে। এক হলের প্রার্থী আরেক হলে প্রচার-প্রচারণা করতে পারবে। কিন্তু সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে দেখতে পেলাম, গতকাল (রোববার) রাত ১টা ১৫ মিনিটে একজন হেভিওয়েট ভিপি প্রার্থী মেয়েদের বিভিন্ন হলে ঘুরে ঘুরে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এজন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু যে ঘটনা আইন বৈধতা দেয় না, সেই ঘটনা ঘটিয়ে আপনারা যদি ক্ষমা চান, তাহলে অন্য প্রার্থীরাও বলবে, আমি একটি ঘটনা ঘটিয়ে নেই, তারপর ক্ষমা প্রার্থনা করব। এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা কোনোভাবেই আইনের সঙ্গে যায় না, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের সঙ্গে যায় না। আশা করি, নির্বাচন কমিশন এটা নিয়ে তাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট করবে।
আবিদুল ইসলাম খানের অভিযোগ, এফ রহমান হলে শিবির ও বাগছাসের যারা প্রার্থী আছে, তাদেরকে প্রভোস্ট পক্ষপাতিত্ব করছেন। এফ রহমান হলের একজন সাংবাদিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং তিনি ছাত্রদের জন্য কাজ করা প্রার্থীদের ব্ল্যাকমেইল করছেন। হল সংস্কারের জন্য যে প্রতিনিধি কমিটি করা হয়েছিল, তারা বলেছিল ডাকসু নির্বাচন হবে না। অথচ এখন তারাই প্রার্থী হয়েছেন। আশা করি নির্বাচন কমিশন প্রভোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
ডাকসু নির্বাচনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে এই ভিপি প্রার্থী বলেন, ফজলুল হক মুসলিম হলের এজিএস প্রার্থী তোফাজ্জল হত্যা মামলার আসামি, এজিএস রাকিবুল রিয়াদ ও জিএস এনামুল হাসান ২০২২ সালে ছাত্রদলের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং ছাত্রলীগের পোস্টেড ছিল। এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা কীভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারকে আমরা প্রশ্ন করছি।
তিনি আরও বলেন, বিজয় একাত্তর হলের এজিএস প্রার্থী তানিম কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছিল। সে কীভাবে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে? আবার ‘স্বতন্ত্র ঐক্য জোট’ থেকে মমিনুল ইসলাম বিধান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তিনি ২০২২ সালে ছাত্রদলের ওপর হামলায় জড়িত ছিলেন। জগন্নাথ হলের স্বপন রায় ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, এখনো পদত্যাগ করেননি অথচ তিনি ভিপি পদে নির্বাচন করছেন।
‘আমরা যেভাবেই প্রচার করতে যাই না কেন, আশঙ্কা করছি গুপ্ত সংগঠনগুলো আমাদের ওপর আক্রমণ চালাতে পারে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’, যোগ করেন ডাকসু’র ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী।
তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে অবশ্যই এসবের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম