তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সরকারের সঙ্গে দলেরও ব্যাপক প্রস্তুতি

সোমবার,

২২ ডিসেম্বর ২০২৫,

৮ পৌষ ১৪৩২

সোমবার,

২২ ডিসেম্বর ২০২৫,

৮ পৌষ ১৪৩২

Radio Today News

তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সরকারের সঙ্গে দলেরও ব্যাপক প্রস্তুতি

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১২:৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

Google News
তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সরকারের সঙ্গে দলেরও ব্যাপক প্রস্তুতি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আর মাত্র দুদিন পর দেশে ফিরছেন। ১৭ বছরের বেশি সময় পর তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করতে নানামুখী প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে সর্বোচ্চ জনসমাগম ও নিরাপত্তা এবং পুরো প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খল করার টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন নেতারা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি দল থেকেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে মঞ্চ তৈরি কাজ শুরু করেছে দলটি। 

বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে রাজধানীতে ২০ লাখ লোকের সমাগম হবে। প্রার্থীরা নিজেদের শক্তি জানান দিতে সর্বোচ্চ নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটাতে চাইবেন। এতে জনসমাগম আরও বাড়তে পারে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতি। বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফুটের গণসংবর্ধনা স্থান এবং গুলশান পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  ইতোমধ্যে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। সোম ও মঙ্গলবারের মধ্যে অধিকাংশ নেতাকর্মী চলে আসবেন। 

দলের শীর্ষ নেতারা তারেক রহমানকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। এ ছাড়া ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থেকে এদিনের কর্মসূচি সফল করবেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন, নাকি ৩০০ ফুটের গণসংবর্ধনা স্থলে আসবেন– তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে হাসপাতালে মাকে দেখতে আগে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেটা মাথায় রেখেই সবকিছু সাজানো হচ্ছে। 

তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার সুবিধার্থে ইতোমধ্যে বিশেষ ট্রেন ও বগি রিজার্ভ চাওয়া হয়েছে।

দেশে ফেরার প্রস্তুতি সম্পন্ন

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস পেয়েছেন তারেক রহমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে উড়োজাহাজটি ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।

ঢাকায় নামার আগে উড়োজাহাজটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করবে। এই ফ্লাইটের বিজনেস ক্লাসে তারেক রহমানের পাশাপাশি আরও পাঁচ সফরসঙ্গীর টিকিট বুকিং দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন– তারক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা জারনাজ রহমান। এ ছাড়া তারেক রহমানের মিডিয়া টিমের প্রধান আবু আবদুল্লাহ সালেহ, পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আব্দুর রহমান সানি ও তাবাসসুম ফারহানা নামে আরেকজনেরও টিকিট বুকিং রয়েছে। 

দলীয় নিরাপত্তা

বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্সসহ একাধিক টিম কাজ করবে। এ ছাড়া দলের বিশ্বস্ত নেতাকর্মীদের সমন্বয়েও একটি টিম গঠন করা হয়েছে। 

দলীয় সূত্র জানায়, নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। এ নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও বৈঠক করছে। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা পর্যন্ত তারেক রহমানকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা দিতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

নিরাপত্তায় সরকারের প্রস্তুতি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তারেক রহমান দেশে এলে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ কোনো ঝুঁকির তথ্য নেই। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর নিরাপত্তায় কোথাও যেন কোনো ফাঁক না থাকে, এ বিষয়টি ভালোভাবে তদারকি করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশে ফেরার পর তারেক রহমান যাতায়াতের সময় পাবেন পুলিশি পাহারাসহ বিশেষ নিরাপত্তা। এ ছাড়া তাঁর বাসভবন ও অফিসেও থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছাড়া কাউকে তাঁর ধারে কাছে ভিড়তে দেবে না পুলিশ। ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও গোয়েন্দারা তারেক রহমানের নিরাপত্তার দিকটি দেখভাল করবেন।

মাঠে থাকবে সোয়াট টিম-বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট

জানা যায়, তারেক রহমান বিমানবন্দর থেকে গুলশানে আসার পথে কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই দিন তাঁর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে ঢাকা মহানগর পুলিশের সোয়াট টিম, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। তাঁর বাসা ও অফিস ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে পুলিশ।

জিয়ার মাজার জিয়ারত 

দেশে ফেরার পর যে কোনো সময় বাবা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে যাওয়ার কথা রয়েছে তারেক রহমানের। বিএনপির একটি সূত্র জানায়, প্রত্যাবর্তনের পরদিন শুক্রবার তিনি সেখানে যেতে পারেন।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান সমকালকে বলেন, প্রস্তুতি খুব ভালো। আমাদের টার্গেট হচ্ছে সর্বোচ্চ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং ওই দিনের কর্মসূচি যেন সুশৃঙ্খলভাবে হয়। 

দলীয়ভাবে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমিনুল হক বলেন, তারেক রহমানের আগমন ঘিরে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের আমরা সংগঠিতভাবে বরণ করে নেব। এটি হবে ইতিহাসের একটি স্মরণীয় সংবর্ধনা। ঢাকা মহানগরী থেকেই ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ অংশ নেবে।

অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমকালকে বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা স্মরণীয় করে রাখতে কাজ করছে কমিটি। প্রতিদিন প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। সারাদেশের নেতার্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সভা হয়েছে। সব অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের