সংগৃহীত ছবি
প্রথম ম্যাচে হতশ্রী ব্যাটিংয়ের পরও ১২৭ রানের টার্গেট দাঁড় করানো গিয়েছিল। শনিবার (২০ নভেম্বর) দ্বিতীয় ম্যাচে সেটিও হলো না। একসময় শঙ্কা জেগেছিল দলীয় শতরান পেরোনো নিয়েও। তবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৮ রানেই শেষ হয়েছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর ইনিংস। পাকিস্তানকে জিততে হলে করতে হবে ১০৯ রান।
প্রথম ম্যাচে অল্প পুঁজি নিয়েও জয়ের আশা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছিল। ম্যাচশেষে আর কিছু রানের আক্ষেপ ছিল। ব্যাটিং ব্যর্থতাকে দুষছিলেন টাইগার দলপতি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। কিন্তু এ ম্যাচেও শিক্ষাটা আর হলো কই। ব্যর্থতার গল্পটাকে আরও বড় করলেন নাঈম-সাইফরা।
টাইগারদের হারানো ৭ উইকেটের ছয়টিই ছিল ক্যাচ আউট। যার মধ্যে তিনটি তালুবন্দি করেছেন পাক উইকেটকিপার রিজওয়ান। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল, বাবর আজমদের ক্যাচ প্রাকটিচ করাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শনিবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শাহিন শাহ আফ্রিদি দলে ফিরেই নিজের প্রথম ওভারেই সাফল্যের দেখা পান। ওভারের পঞ্চম বলে ফেরান আগের ম্যাচের ব্যর্থ সাইফ হাসানকে। এক বল খেলে কোনো রান তুলতে না পেরেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি।
যদিও জোরালো আবেদনের পরেও প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে সাফল্য পায় পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে একাদশে ছিলেন না শাহিন শাহ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে হাসান আলির জায়গায় তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এদিকে, দ্বিতীয় ওভারে ওয়াসিম জুনিয়রের বলে ফিরে গেছেন আরেক ব্যর্থ ব্যাটসম্যান নাঈম শেখ। ৮ বল খেলে মাত্র ২ রান করে ফিরে গেছেন তিনি।
এর আগে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) প্রথম ম্যাচেও ব্যর্থ ছিলেন সাইফ। ব্যাট হাতে করেছিলেন মাত্র ১ রান। অথচ সৌম্য-লিটনদের জায়গায় তাকে দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাশা মেটানো দূরে থাক, খোলস ছেড়ে বেরই হতে পারলেন না সাইফ।
এদিকে, প্রথম ওভারেই বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন শাহিন আফ্রিদি। দলকে এনে দিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু। তাই হয়ত নিজের দ্বিতীয় তথা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আফিফের ছক্কা হাঁকানো হজম করতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলে মাত্র এক রান দিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকান আফিফ হোসেন। এরপরের বলে কোনো রান নেওয়ার চেষ্টাই করেননি আফিফ। ক্রিজেই বল ছিল। কিন্তু তারপরও অন্যায়ভাবে আফ্রিদি আফিফের পা বরাবর বল ছুড়ে মারেন। যা ক্ষুব্ধ করেছে বাংলাদেশের সমর্থকদের।
এর আগে প্রথম ম্যাচে নুরুল হাসান সোহানকে স্লেজিং করেছিলেন পাক পেসার হাসান আলি। যদিও এরই মধ্যে তার শাস্তিও পেয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে তাকে ওয়ান ডেমিরিটস পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।
২১ বলে ২০ রান করে বিপর্যস্ত দলকে টেনে তুলছিলেন আফিফ। কিন্তু শাদাব খানের বল ঠিকঠাক খেলতে না পেরে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন। এরপর ফিরে গেছেন দলীয় কাপ্তান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ১৫ বল খেলে মাত্র ১২ রান করে হারিস রউফের বলে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনিও। পরপর দুটি ক্যাচ তুলে নিলেন পাক উইকেটকিপার।
অন্যদিকে, এক প্রান্তের ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে অন্য প্রান্ত আগলে রাখছিলেন নাজমুল হাসান শান্ত। তার ব্যাটে ভর করেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েও রানের চাকা সচল ছিল টিম টাইগার্সের। কিন্তু চল্লিশের ঘরে গিয়ে তিনিও কাটা পড়লেন। শাদাব খানের হাতে ক্যাচ এন্ড বোল্ড হয়ে ৩৪ বলে ৪০ করে সাজঘরে ফিরেছেন এই ব্যাটার।
প্রথম ম্যাচে সোহান-মেহেদী জুটিতে শেষ দিকে মান রক্ষা হয় টিম টাইগার্সের। আজও এমন একটা ইনিংস প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু মোহাম্মদ নাওয়াজের হাতে ক্যাচ এন্ড বোল্ড হয়ে ৮ বল খেলে ৩ রান করে ফিরে গেলেন তিনিও। এরপর শাহিন শাহর দ্বিতীয় শিকার হয়ে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহানও। টানা তিনটি ক্যাচ তালুবন্দি করলেন রিজওয়ান।
রেডিওটুডে নিউজ/এসএস