গত নভেম্বর মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৩৪টি। নিহত ৪৮৩ জন এবং আহত ১৩১৭ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৪ (১৩.২৫%), শিশু ৭১ (১৪.৬৯%)। ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৪ জন, যা মোট নিহতের ৪০.১৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২.৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১.৯৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন, অর্থাৎ ১১.৮০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নভেম্বরে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন নিখোঁজ রয়েছে। ৪৭টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯৪ জন (৪০.১৬%), বাসের যাত্রী ২৪ জন (৪.৯৬%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-মিকচার মেশিন গাড়ি আরোহী ২২ জন (৪.৫৫%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ১৪ জন (২.৮৯%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৮৩ জন (১৭.১৮%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-টমটম-মাহিন্দ্র) ৩১ জন (৬.৪১%) এবং রিকশা-বাইসাইকেল আরোহী ৯ জন (১.৮৬%) নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি (২৪.৫৩%) জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি (৪৫.৮৮%) আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি (১৫.৩৫%) গ্রামীণ সড়কে এবং ৭১টি (১৩.২৯%) শহরের সড়কে এবং ৫টি (০.৯৩%) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাসমূহের ১২২টি (২২.৮৪%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি (৪৪.৩৮%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি (২০.৪১%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৫৯টি (১১.০৪%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি (১.৩১%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৬.৪০%, প্রাণহানি ২৪.৬৩%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬.১০%, প্রাণহানি ১৪.০৭%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০.৯৭%, প্রাণহানি ২২.৯৮%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১২.১৭%, প্রাণহানি ১৪.৪৯%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৩৬%, প্রাণহানি ৬.২১%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৬১%, প্রাণহানি ৪.৯৬%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.১১%, প্রাণহানি ৭.২৪% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.২৪%, প্রাণহানি ৫.৩৮% ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩০টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় সবচেয়ে বেশি ৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছে। সবচেয়ে কম শেরপুর ও পঞ্চগড় জেলায়। ৯টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ:
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. ত্রুটিপূর্ণ সড়ক; ৩. বেপরোয়া গতি; ৪. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৫. বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৬. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৭. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৮. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৯. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ১০. বিআরটিএ-র সক্ষমতার ঘাটতি; এবং ১১. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

