শুক্রবার,

০৯ মে ২০২৫,

২৬ বৈশাখ ১৪৩২

শুক্রবার,

০৯ মে ২০২৫,

২৬ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

অবশেষে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেলেন সেই ‘আইএস বধূ’ শামীমা

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:১৫, ১৩ মার্চ ২০২৫

Google News
অবশেষে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেলেন সেই ‘আইএস বধূ’ শামীমা

অবশেষে, ব্রিটেনের নাগরিকত্ব ফিরে পাচ্ছেন ‘আইএস বধূ’ খ্যাত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী শামীমা বেগম। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সুপ্রিমকোর্ট এক রায়ে তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত তুলে নেয়। এর ফলে শামীমা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে আবারও ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বুধবার ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন ‘ইউকে হিউম্যান রাইটস ব্লগ’ এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছে। এই রায়ের ফলে শামীমা বেগমের ব্রিটেনে ফেরার পথ খুলে গেলেও, ব্রিটিশ সরকার তাকে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখার। রায় নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি ব্রিটিশ সরকার। 

জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে শামীমাসহ আরও একজন ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছিল। তবে আপিল বিভাগের দীর্ঘ শুনানির পর রায়ে বলা হয়, নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ প্রত্যাহারের ফলে তাদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পুরো সময়ের জন্য কার্যকর থাকবে।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামীমা বেগম ২০১৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে দুই বান্ধবীসহ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এ যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে তিনি ডাচ নাগরিক ইয়াগো রিয়েডিকে বিয়ে করেন এবং চার সন্তানের জন্ম দেন, যাদের সবাই পরবর্তীতে মারা যায়।

২০১৯ সালে সিরিয়ার আল হোল শরণার্থী শিবিরে অবস্থানকালে ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করে। এরপর তৎকালীন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ যুক্তি দিয়েছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে।

তবে, ব্রিটিশ সরকারের দাবি ছিল, শামীমার পিতৃসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ থাকায় তাকে রাষ্ট্রহীন করা হয়নি। যদিও বাংলাদেশ সরকার তখনই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, শামীমা বেগমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেই এবং তিনি দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না।

স্বামী মারা যাবার পর, নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য ২০২৩ সালে ২৪ বছর বয়সি শামীমার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেছিলেন। আপিল আদালতের তিনজন বিচারক সর্বসম্মতিক্রমে তার নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধারের আবেদন খারিজ করে দেন।

২০১৯ সালে আইএস পরাজিত হওয়ার পর সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আল–রোজ শিবিরে শামীমার সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি এখনো সেখানেই আছেন। শামীমার আইনজীবীরা বলেন, সেই শিবিরের অবস্থা করুণ! সেখানে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে মানুষ। রোগবালাই নিত্যকার ঘটনা। সেখানে শামীমাকে অন্য ব্রিটিশ নারী ও শিশুদের সঙ্গে নির্বিচারে আটকে রাখা হয়েছে। অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে সেখানে।

শামীমা বেগম জেনেশুনে একটি নিষিদ্ধ সংগঠনে যোগদানের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এই কাজের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত। তবে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, আমাদের অগ্রাধিকার যুক্তরাজ্যের সুরক্ষা এবং তা বজায় রাখা। 

এই রায়ের ফলে এখন শামীমার যুক্তরাজ্যে ফেরার পথ খুলে গেলেও, ব্রিটিশ সরকার তাকে ফিরিয়ে নেওয়া বা নতুন করে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা সময়ই বলে দেবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের