
সয়াবিন ও ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১০ টাকা করে বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা। নতুন দর প্রস্তাব করে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে এ খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ, আন্তর্জাতিক বাজার দরের চেয়ে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব অনেক বেশি। দর বাড়ানোর প্রস্তাব পর্যালোচনার জন্য আজ রোববার নিজেদের মধ্যে বৈঠক ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে দর চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির ফলে দেশের বাজারে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলে ১০ টাকা বৃদ্ধির অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দর ১৮৯ থেকে বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। বোতলজাত পাঁচ লিটারের দর ৯২২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭২ টাকা এবং প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৬৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। আর ভোজ্যতেলের দামও লিটারে ১০ টাকা বাড়িয়ে ১৬০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকার বাজারে গতকাল প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৮৮ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৭০ থেকে ১৭৫ এবং ভোজ্যতেল ১৫৩ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেশি। তখন ভোজ্য ও সয়াবিন উভয় তেলের দাম কমানোর সুপারিশ করে সংস্থাটি। সে সুপারিশের ভিত্তিতে গত ১২ আগস্ট ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। পরে আন্তর্জাতিক বাজারে দর কিছুটা বাড়লেও লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর মতো পরিস্থিতি হয়নি বলে মনে করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, ভোজ্য ও ভুট্টার তেল আমদানিতে এক শতাংশ উৎসে কর বসিয়েছে। এতে আসলে কতটুকু দাম বাড়ানো যৌক্তিক হবে তা নিয়ে আজকে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবিসহ সরকারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে যৌক্তিক দাম নির্ধারণের খসড়া তৈরি করা হবে। এরপর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে সেটি চূড়ান্ত করা হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি। তাই বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। রোববার সংশ্লিষ্টদের নিয়েও বৈঠকের পর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে দাম নির্ধারণ করা হবে। ব্যবসায়ীরাও যেন লোকসানে না পড়েন, আবার বাড়তি দামের কারণে ভোক্তাদের জন্য যেন চাপ তৈরি না হয় এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখেই দাম নির্ধারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে চাইলেও তা তিন থেকে চার টাকার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম