
ভারতের গাজিয়াবাদে বলিউড অভিনেত্রী দিশা পাটানির বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী (এসটিএফ) যৌথ অভিযান চালায়। অভিযুক্তরা ছিলেন গোল্ডি ব্রার-রোহিত গোদারা গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর দিশার বাড়িতে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, উত্তর প্রদেশের মথুরায় দুই আধ্যাত্মিক গুরুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এই ঘটনা ঘটে, এবং দুটি গ্যাং গ্রুপ গোল্ডি ব্রার ও রোহিত গোদারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনার দায় স্বীকার করে।
এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে মাঠে নামে পুলিশ। ঘটনার ৫ দিন পর অভিনেত্রীর বাড়িতে গুলি চালানো দুই অভিযুক্ত পুলিশের এনকাউন্টারে মারা যায়। সেই দুই অভিযুক্তের নাম রবীন্দ্র ও অরুণ। তারা গোল্ডি ব্রার-রোহিত গোদারা গ্যাংয়ের সদস্য ছিলো বলে দাবি পুলিশের। তাদের কাছ থেকে তুরস্কে তৈরি জিগানা পিস্তল ও অস্ট্রিয়ার গ্লোক পিস্তল উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এই একই মডেলের জিগানা পাকিস্তান থেকে ভায়া নেপাল আকাশপথে ড্রোনের সাহায্যে পাচার করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এর আগে এই ধরনেরই পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছিল গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ ও পাঞ্জাবি রকস্টার সিধু মুসেওয়ালা খুনের কাজে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে পুলিশের একটি দল অভিযুক্তদের মুখোমুখি হয়। সেই সময় অভিযুক্তরা পুলিশের দিকে গুলি চালায়। পাল্টা গুলিতে দুই অভিযুক্ত গুরুতর আহত হয় এবং হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, দিশা পাটানির বাড়িতে মোট পাঁচজন গুলি চালিয়েছিল। তারা সকলেই গোল্ডি ব্রার গ্যাংয়ের ছেলে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তদন্তকারীদের মতে, জিগানা ও গ্লোক পিস্তল গোল্ডি ব্রার ও লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের খুবই পছন্দের অস্ত্র।
এদিকে, ঘটনার দিন ভোর ৩টা ৪৫ মিনিট নাগাদ দুই বাইক আরোহী দিশা পাটানির বারেলির বাড়িতে একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। সেই সময় দিশা বাড়িতে না থাকলেও, তার বাবা-মা এবং ভাইবোন ভেতরে ছিলেন।
এ ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার পর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশ বিভিন্ন রুটের সিসিটিভি ফুটেজ এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির অপরাধের রেকর্ড বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাদের খোঁজে অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, বলিউডের ওপর বহু বছর ধরে কালো ছায়া বিছিয়ে রেখেছে অপরাধজগৎ। বলিউডের বহু খ্যাতনামা নানা সময়ে গ্যাংস্টারদের থেকে হুমকিবার্তা পেয়ে আসছেন। কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার পর বলি ভাইজানখ্যাত অভিনেতা সালমান খান যেমন লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নিশানায়। যার জেরে নানা সময়ে অঘটনের শিকার কপিল শর্মাসহ সালমান-ঘনিষ্ঠরা। সেই তালিকায় ছিলেন অভিনেত্রী দিশা পাটানিও।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম