
বাংলাদেশকে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তার সহকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সম্মেলনের বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, এখনই সময় বাংলাদেশকে গুরুত্বের সঙ্গে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিকল্পসমূহ, বিশেষ করে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন বিবেচনা করার।
গুগল সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের ভাই কার্ল পেজ পরমাণু শক্তির নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি এবং হাইব্রিড ব্যবস্থার সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন, যা নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম। তিনি বলেন, ভাসমান বার্জ-ভিত্তিক পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরগুলো সাশ্রয়ী, কম রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প খাতকে বহু দশক ধরে শক্তি জোগাতে সক্ষম।
পেজ আরো উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রধান উন্নয়ন অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোর কাছে এখন আর পারমাণবিক শক্তি কোনো নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো ইতিমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এসব প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।
তার মতে, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী সাফল্যের কারণে দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে সক্ষম—যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দামের স্থিতিশীলতা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
পেজ বলেন, বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির কৌশলগত কেন্দ্র হতে পারে এবং পরমাণু উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্ব দিতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যার লক্ষ্য সৌরবিদ্যুতের প্রসার ত্বরান্বিত করা। তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক শক্তির বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তের আগে গভীর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই এই সুযোগগুলো পরীক্ষা করব। তবে এসব আশাব্যঞ্জক প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণার দরকার রয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা ব্যাপকভাবে কমাতেই হবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম