শনিবার,

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,

২ ফাল্গুন ১৪৩১

শনিবার,

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,

২ ফাল্গুন ১৪৩১

Radio Today News

কৃষক পিতার পক্ষে আহত জুয়েলের চিকিৎসা ব্যয় মেটানো আর সম্ভব হচ্ছে না

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:২৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১২:৩৭, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Google News
কৃষক পিতার পক্ষে আহত জুয়েলের চিকিৎসা ব্যয় মেটানো আর সম্ভব হচ্ছে না

জুয়েল রানা  বলেন, গত ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে ছিলাম। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ করে নির্বিচারে গুলি চালায়। হঠাৎ আমার পেটে গুলি বিদ্ধ হয়। সহযোদ্ধারা আমাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে আমার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও সুস্থ হতে পারিনি। আরো উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে ডাক্তার জানিয়েছেন।

চিকিৎসাধীন মোঃ জুয়েল রানা আরো বলেন, আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোন স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকার দেখতে চাই না। আমরা চাই বৈষম্য বিরোধী, অসাম্প্রদায়িক ও সঠিক একটি সরকার ব্যবস্থা। 

জুয়েল রানা বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের। তিনি সরকারি ভোলা কলেজের দর্শন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও জেলা ছাত্রদলের সদস্যও তিনি। তার স্ত্রীর নাম মুনিয়া আক্তার (২৪)। বাবা আব্দুল জব্বার শেখ কৃষি কাজ করেন। মাতা তাছলিমা বেগম গৃহিণী।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েও অলৌকিক ভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি বিছানায়। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন নিয়মিত থেরাপি নিতে জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। তার দরকার উন্নত চিকিৎসা। এ জন্যে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।

জুয়েলসহ তিনি গ্রামে পরিবারের সাথেই বসবাস করেন। পরিবারে বাবা-মা ছাড়াও এক ভাই ও এক বোন রয়েছেন। পড়াশুনার পাশাপাশি পরিবারের অর্থ সংকট ঘুচাতে জুয়েল ছোটখাট ব্যবসা করতেন। 

তিনি আরো জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯ জুলাই ঢাকার বিজয় সরণি এলাকায় মিছিলে অংশ নেন। এ সময়ে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় রানাকে একাধিক ছাত্ররা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখানেই তার শরীরে সফল অস্ত্রোপচার হয়। 

এরপর তার পেটে আবার দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তার শরীরের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাকে শ্রীপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু গত ১১ আগস্ট শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে তাকে আবার ভর্তি করা হয়। এখনও তার চিকিৎসা চলছে। 

একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে সংসার। রানার যেটুকু আয় রোজগার ছিল তাও বন্ধ। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সুচিকিৎসাও হচ্ছে না। পুরো পরিবার এখন দিশেহারা অবস্থায় আছে।  

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মোঃ জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘মোঃ জুয়েল রানা একজন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সক্রিয় ছিলেন।’ 

তিনি আরো বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পেটে গুলিবিদ্ধ জুয়েল রানার প্রয়োজন সুচিকিৎসা। 

তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে জুয়েল রানা’র সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের প্রকাশিত খসড়া তালিকা অনুযায়ী সুচিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য, সহযোগিতা করা হচ্ছে। শহিদ পরিবারগুলোর খোঁজ খবরও নেয়া হচ্ছে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের