
গোড়ায় মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত, লাল কাপড় বাঁধাকে ‘শিরক ও গুনাহর কাজ’ আখ্যা দিয়ে মাদারীপুরে শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা আলম মীরার কান্দি এলাকায় শতবর্ষী বটগাছটি কেটে ফেলেন স্থানীয় কিছু লোক। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান প্রতিক্রিয়াও দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে প্রশাসনের লোকজন গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেন। গাছটির কাণ্ড, ডালপালা ও কয়েকটি শিকড় কাটা হলেও এখনো মূল শিকড় ও গোড়া কাটা বাকি। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরার কান্দি গ্রামের কুমার নদের পাশে স্থানীয় হান্নান হাওলাদার ও সাত্তার হাওলাদারের মালিকানাধীন একটি বাগানে শতবর্ষী একটি বটগাছ ছিল। গত কয়েক বছর গাছটিকে ঘিরে স্থানীয়রা নানা কর্মকান্ড করে আসছিলেন। স্থানীয় মুসলাম ও হিন্দু উভয় ধর্মের মানুষ মনের বাসনা পূরণ, রোগবালাই থেকে মুক্তিসহ নানা বিষয়ে মানত করে বটগাছের গোড়ায় মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালাতেন। পাশাপাশি নতুন গামছা, কাপড়, মিষ্টিসহ জিনিসপত্র রেখে যেতেন।
সম্প্রতি বৈশাখ উপলক্ষে বটগাছের নিচে মেলা ও বাউল গান আয়োজনের উদ্যোগ নেন স্থানীয়রা। এতে এক পক্ষ বাধা দিলে আয়োজন থেকে পিছিয়ে আসেন তারা। তবে মানতের বিষয়টি চলতে থাকে। পরে স্থানীয় কয়েকজন আলেম ও জনতা মিলে সোমবার সকালে গাছটি কাটতে শুরু করেন। বর্তমানে গাছটির গোড়ার সামান্য অংশ কাটা বাকি আছে।
মাদারীপুর বন বিভাগের জেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবে পরবর্তী কাজ করা হবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, গাছটি এখনও জীবিত আছে। আমরা গাছটি বাঁচিয়ে রাখার পদক্ষেপ নেবো। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনার পর থেকে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং গাছের মালিক কাউকেই পাওয়া যাচ্ছে না।
একাধিকবার ফোন করেও গাছের মালিক হান্নান হাওলাদার ও সাত্তার হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।