সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে এক আসামির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বলছে, হেফাজতে আসামির মৃত্যু ‘শ্বাসকষ্ট’জনিত কারণে। অন্যদিকে আসামির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকরা বলেছেন।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নিহত শাহাদত হোসেন (৪৫) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের মৃত খলিল হোসেনের ছেলে।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হেমাদ্রি শেখর সাহা জানান, সিভিল পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শাহাদতকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির সময় তার হাতের আঙুলে ক্ষতচিহ্ন ছিল। ক্ষত দেখে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা হাসপাতাল স্টাফদের পাবলিক অ্যাসল্ট বলে দাবি করেন। ভর্তির পর হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই আসামি মারা যান।
তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে শরীরের ভেতরে হয়ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। মারপিটের ভয়ে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে তার। ময়নাতদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ছুটিতে থাকায় পুলিশ সুপার ফারুক হোসেনকে কল করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, গত ১২ নভেম্বর উল্লাপাড়ার বগুড়া-পাবনা মহাসড়কের পাশে চৌকিদহ সেতুর নিচ থেকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রায়পুর এলাকার আমিনুল ইসলাম নামের এক অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে ওই স্থানে দুর্বৃত্তরা লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নিহত শাহাদত ওই ঘটনার সন্দেহভাজন আসামি।
তিনি আরও বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা উদ্ধারে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উল্লাপাড়া পুলিশ তাকে ধরে ডিবিতে হস্তান্তর করে। আগে থেকে তার শ্বাসকষ্ট থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্টে কারণে তিনি হয়ত মারা যেতে পারেন বলে সহকর্মীরা জানান। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগীর স্বজনদের ডিবি পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গেছেন। হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের নার্স-স্টাফরাও গণমাধ্যমকর্মীদের এমনটি জানিয়েছেন। হাসপাতালে ওই সময় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গোয়েন্দা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও দুই নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আব্দুল মজিদও ছিলেন।
উল্লাপাড়ার ওসি মো. একরামুল হক বলেন, শাহাদতকে ধরিনি। আসামির বিষয়ে ডিবির এসআই নাজমুল হককে শুধু তথ্য দেওয়া হয়েছে। তারাই মূলত তাকে ধরতে পারেন। ডিবির এসআই নাজমুল হককেও কল করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

