শনিবার,

০৩ মে ২০২৫,

২০ বৈশাখ ১৪৩২

শনিবার,

০৩ মে ২০২৫,

২০ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

সাপের কামড়ের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন, বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকরী অ্যান্টিভেনম তৈরি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ৩ মে ২০২৫

আপডেট: ০৭:১৮, ৩ মে ২০২৫

Google News
সাপের কামড়ের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন, বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকরী অ্যান্টিভেনম তৈরি

এবার প্রাণঘাতী সাপের বিষ প্রয়োগ করে এক ব্যতিক্রমী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের সাবেক ট্রাক মেকানিক টিম ফ্রিড। ১৮ বছর ধরে তিনি নিজ শরীরে কোবরা, মাম্বা, রেটলস্ন্যাকসহ ১৬ প্রজাতির সাপের বিষ প্রয়োগ করেন। এর ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত ও কার্যকর অ্যান্টিভেনম তৈরি হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন। এটি ভবিষ্যতে সাপের কামড়ের চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তারা।

এদিকে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক প্রতিষ্ঠান সেন্টিভ্যাক্স-এর প্রধান নির্বাহী এবং গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক জ্যাকব গ্ল্যানভিল বলেছেন, ‘টিম প্রায় ১৮ বছর ধরে নিজের শরীরে সাপের বিষ প্রয়োগ করে চলেছেন, যেগুলো সাধারণত একটি ঘোড়াকেও মেরে ফেলতে পারে। এটা এককথায় বিস্ময়কর!’

গবেষণা অনুযায়ী, ফ্রিডের রক্ত থেকে সংগৃহীত দুটি সুরক্ষা অ্যান্টিবডি এবং একটি ক্ষুদ্র আণবিক বিষ প্রতিরোধক একত্র করে তৈরি করা হয়েছে নতুন এই অ্যান্টিভেনম ককটেল। এটি ১৯টি মারাত্মক প্রজাতির মধ্যে ১৩টির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সুরক্ষা এবং বাকিগুলোর ক্ষেত্রে আংশিক সুরক্ষা দিতে সক্ষম। বর্তমানে প্রচলিত অ্যান্টিভেনম সাধারণত নির্দিষ্ট একটি প্রজাতির বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর। আর সাধারণত ঘোড়া বা ভেড়াকে বিষ দিয়ে এই অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়। এর ফলে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ারও আশঙ্কা থাকে।

২০০০ সালে ফ্রিড যখন তার সাপ সংগ্রহের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হন, তখন থেকে নিজেই নিজেকে প্রতিষেধক হিসেবে বিষ প্রয়োগ করতে শুরু করেন। ২০০১ সালে একটি মিসরীয় কোবরা কামড়ানোর পর তিনি চার দিন কোমায় ছিলেন, তবু থেমে যাননি। পরে তিনি তাঁর হাতের ওপর সাপের ছোবল নিতেও রাজি হন।

নিজের এই কর্মকাণ্ডের খবর একটি ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে গ্ল্যানভিলের নজরে এসেছিলো। তখনই তিনি ফ্রিডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গবেষকের ভাষায়, ‘ফোন ধরেই ফ্রিড বললেন—অবশেষে! আমি এই ফোনকলের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’

লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের স্নেকবাইট গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক নিকোলাস কেইসওয়েল বলেছেন, ‘এই গবেষণা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কমসংখ্যক অ্যান্টিবডি একত্র করে এমন বিস্তৃত সুরক্ষা পাওয়া যাবে—এই ধারণা ভবিষ্যতের চিকিৎসায় বিপ্লব আনতে পারে।’

মূলত এই গবেষণা অ্যালাপিড শ্রেণির বিষধর সাপকে কেন্দ্র করে হলেও ভবিষ্যতে ভাইপার শ্রেণির বিরুদ্ধেও অনুরূপ প্রতিষেধক তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম ধাপে এই অ্যান্টিভেনম অস্ট্রেলিয়ায় সাপের কামড় খাওয়া কুকুরদের ওপর প্রয়োগ করে কার্যকারিতা যাচাই করা হবে। ঠিক এরপরই শুরু হবে মানবদেহে এই ক্লিনিকাল ট্রায়াল।

সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত গবেষণাটি ‘সেল’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের

আরও পড়ুন