বৃহস্পতিবার,

০১ মে ২০২৫,

১৮ বৈশাখ ১৪৩২

বৃহস্পতিবার,

০১ মে ২০২৫,

১৮ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

বাগেরহাটে চাষ হচ্ছে ব্রি-১০৫ জাতের ‘ডায়াবেটিক ধান’

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২৭, ১ মে ২০২৫

Google News
বাগেরহাটে চাষ হচ্ছে ব্রি-১০৫ জাতের ‘ডায়াবেটিক ধান’

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ব্রি-১০৫ জাতের ধান। এই ধান থেকে উৎপাদিত চালে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। যা একে বিশেষভাবে উপযোগী করে তুলেছে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য। এ কারণেই এই জাতের ধানকে ডায়াবেটিক ধান নামে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ জানায়, ফকিরহাটে এবছর অন্য ধানের পাশাপাশি ব্রি-১০৫ আবাদ হয়েছে। যার নাম দেয়া হয়েছে ডায়াবেটিকস রাইস। এই ধান চাষ করেছেন এক কৃষক। তাকে কৃষি বিভাগ নানা পরামর্শসহ সবধরনের সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি-১০৫ জাতের ধানের প্রতি কৃষকরা ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। পাশাপাশি পুষ্টিমান বেশি হওয়ায় বাজারেও এর কদর বাড়ছে।

উপজেলার পিলজংগ গ্রামের কৃষক মাহমুদ সরদার চলতি বোরো মৌসুমে এক একর জমিতে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় এবং প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) এর আওতায় এক একর জমিতে ব্রি-১০৫ জাতের ধান চাষ করেছেন। ধান রোপণ থেকে শুরু করে পরিচর্যা ও সেচসহ অন্যান্য খরচ বাবদ তার মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তিনি এখান থেকে ৭১ মণ ফলন পেয়েছেন। ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে চাহিদা থাকার কারণে তিনি কিছু চাল ও ধান বিক্রি করবেন। এছাড়া পরবর্তী মৌসুমে চাষাবাদের জন্য তিনি নিজে কিছু বীজ সংরক্ষণ করবেন ও অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করবেন। তিনি আশা করছেন, এই জমি থেকে তার প্রায় ২ লাখ টাকা আয় হবে যা সাধারণ ধানের চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক।
  
পিলজংগ ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, কৃষককে বীজ, সার, কিটনাশক প্রদানসহ সকল প্রকার পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। ধান খুব ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক দেখভাল করেছে।
 
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন জানান, ব্রি-১০৫ এর জি আই (গ্রাইসেমিক ইন্ডেক্স) ৫৫ এর নিচে হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীরাও এই ধানের চাল খেতে পারবে এবং অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৭ শতাংশ হওয়ায় এই ভাত ঝরঝরে। এর প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। ফলে অন্য চালের তুলনায় এ চালের ভাত বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। এছাড়া ব্রি- ১০৫ ধান পেকে গেলেও পাতা সবুজ থাকে, সহজে হেলে পড়ে না এবং রোগবালাই এর আক্রমণ তুলনামূলক কম। তাই কম বালাইনাশকে চাষ করা যায়।
  
বাগেরহাট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, দেশের কৃষিখাতে নতুন প্রযুক্তি ও বৈচিত্র্য আনার প্রয়াসে এই ধরনের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়। কৃষক মাহমুদ সরদার সফল হওয়ায় আগামী মৌসুমে এ ধান ফকিরহাটসহ আশপাশের উপজেলায় ব্যাপক পরিসরে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের