শনিবার,

০৩ মে ২০২৫,

২০ বৈশাখ ১৪৩২

শনিবার,

০৩ মে ২০২৫,

২০ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

ভারত হামলা চালালে ‘নিশ্চিত ও কঠোর’ জবাব দেওয়া হবে; পাকিস্তান সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ৩ মে ২০২৫

আপডেট: ০৭:২৪, ৩ মে ২০২৫

Google News
ভারত হামলা চালালে ‘নিশ্চিত ও কঠোর’ জবাব দেওয়া হবে; পাকিস্তান সেনাবাহিনী

ভারতের পেহেলগামে ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছে, যদি ভারত যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তবে এর ‘নিশ্চিত ও কঠোর’ জবাব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে জানানো হয়, পাকিস্তানের জনগণের আকাঙ্ক্ষা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা হবে। খবর জিও নিউজের

রাওয়ালপিন্ডির জেনারেল হেডকোয়ার্টারে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ কোর কমান্ডারস সম্মেলনে এই বার্তা দেওয়া হয়।

গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনায় দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। বরং, ইসলামাবাদ জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।

তবে ভারত একতরফাভাবে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে—সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, ওয়াগা-অটারি সীমান্ত বন্ধ করার মতো কঠোর পদক্ষেপ এর মধ্যে অন্যতম। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার, ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল (শুধুমাত্র শিখ তীর্থযাত্রীদের বাদে) এবং সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সামরিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অটল থাকার অঙ্গীকার করেন। সেনাপ্রধান আসিম মুনির সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব, মনোবল ও প্রস্তুতির প্রশংসা করেন এবং সব ফ্রন্টে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।

বৈঠকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং সাম্প্রতিক হামলার পর সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, এ ধরনের নৃশংস ও উসকানিমূলক তৎপরতা কেবল আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াবে এবং এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

ফোরামটি অভিযোগ করে জানায়, ভারত বারবার সঙ্কটকে রাজনৈতিক ও সামরিক স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টায় লিপ্ত। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা ঘটনার মতো এবারও পেহেলগামের ঘটনার পেছনে একই ধরনের কৌশল রয়েছে, যার উদ্দেশ্য অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া এবং কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির ফায়দা তোলা।

এছাড়া, সাম্প্রতিক এই ঘটনার মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মনোযোগ ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করে ফোরাম।

একইসঙ্গে, ভারত যে সিন্ধু জল চুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে—তাকে ‘জলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিপজ্জনক প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করে ফোরাম। এতে দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত অস্থিতিশীলতা বাড়বে এবং ২৪ কোটিরও বেশি পাকিস্তানির জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলেও সতর্ক করা হয়।

ফোরাম আরও দাবি করে, ভারতের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রত্যক্ষ মদদে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের চরম লঙ্ঘন।

বৈঠক শেষে সেনাপ্রধান আসিম মুনির জানান, সন্ত্রাস, জবরদস্তি বা আগ্রাসন—সরাসরি হোক বা প্রক্সি—পাকিস্তানের শান্তি ও উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। সেনাবাহিনী দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় পুরোপুরি প্রস্তুত আছে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের

আরও পড়ুন