
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শেষ মুহূর্তের পরিবর্তন এনেছেন। এ নিয়ে সৌদি আরবসহ ও ইসলামিক দেশগুলোর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বুধবার (১ অক্টোবর) এই খবর প্রকাশ করেছে মিডল ইস্ট মনিটর।
সংবাদভিত্তিক সূত্রগুলো জানায়, টেকনিক্যালভাবে যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া ও আরব-মুসলিম নেতাদের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত প্রস্তাবের তুলনায় এখন যে চূড়ান্ত নথি হামাসকে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা মৌলিকভাবে ভিন্ন। বিশেষভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, তুরস্ক, জর্ডান ও কাতার—পাশাপাশি মিসরও।
আরব আলোচকদের বরাতে মিডল ইস্ট মনিটর বলেছে, প্রাথমিকভাবে ওই প্রস্তাবটি ছিল একটা যৌথ ও সমন্বিত পদক্ষেপ। কিন্তু নেতানিয়াহুর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তা এখন এক ধরনের ইসরায়েলি নিরাপত্তা নির্দেশিত দলিলে রূপ নিয়েছে—এটি ন্যায্য শান্তি কাঠামো নয় বলেই তারা মনে করছেন।
সূত্রগুলো বলছে, গত রোববার হোয়াইট হাউসের দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার নেতানিয়াহু ও তার উপদেষ্টা রন ডারমারের সঙ্গে ছয় ঘণ্টার একটি গোপন বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে নেতানিয়াহু বিশেষ করে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার সংক্রান্ত ধারা ও সময়সীমা বদলে দেন।
সেনা প্রত্যাহার—শর্ত ও ভেটো
সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটি হলো সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সরাসরি হামাসের অস্ত্র নিষ্ক্রিয়করণের অগ্রগতিকে যুক্ত করা। নতুন খসড়ায় বলা হয়েছে, হামাস নিজেদের নিরস্ত্র না করলে ইসরায়েল গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে না। একই সঙ্গে সূত্রগুলো বলছে, চূড়ান্ত প্রস্তাবে ইসরায়েলকে প্রয়োজনমত পুরো প্রক্রিয়ায় ভেটো দেওয়ার সুযোগও রাখা হয়েছে।
মার্কিন প্রতিক্রিয়া: মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের উদ্ধৃতি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—হামাস যদি নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা ছোটখাটো সংশোধন চান, সেগুলো বিবেচনা করা হবে। কিন্তু পুরো পরিকল্পনাটি আবার পরিপূর্ণভাবে পুনরায় আলোচনার জন্য উন্মুক্ত থাকবে না বলে স্পষ্ট করে বলেছেন।
প্রতিক্রিয়া ও পরিণতি
আরব ও মুসলিম নেতারা যে মোড়কে আলোচনায় বসেছিলেন, সেখানে এখন অসন্তোষ এবং সন্দেহ দেখা দিয়েছে—তারা বলছেন, যদি রাজকীয় বা আরব অংশীদারিত্বে তৈরির কথা ছিল, তাহলে সেটি যথাযথভাবে বজায় থাকা উচিত ছিল। সূত্ররা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই পরিবর্তনগুলো যদি অটল থাকে, তাহলে তাত্ক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়বে।
মিডল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, বিষয়টি সমাধানের জন্য এখন কূটনৈতিক ব্যস্ততা বাড়তে পারে—আরব দেশগুলো সম্ভাব্য বিকল্প উদ্যোগ বা প্রেসিং পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। আবারও ইঙ্গিত করা হয়েছে, সর্তকতা ও রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পেলে পরিকল্পনার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম