
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা ও বোমাবর্ষণে গত ২২ মাসে ২৭৮ গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতি মাসে গাজায় গড়ে ১৩ সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে মারা গেছেন। গত রোববার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সোশ্যালিস্ট অ্যান্ড ডেমোক্র্যাট গ্রুপের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়, গাজার আগে ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইরাকে সর্বোচ্চ ১৮৫ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যুগোস্লাভিয়ায় ১৪০, আফগানিস্তানে ২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ৭৬ জন, ২০১১ থেকে এ পর্যন্ত সিরিয়ায় ১৪১ জন, ২০২২ থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনে ২৯ সাংবাদিক মারা যান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালেও এত সাংবাদিক মারা যাননি। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত বিশ্বযুদ্ধে ৬৯ সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছিলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় ব্যাপক হারে সাংবাদিক নিহতের ঘটনা কাকতালীয় নয়। ইজরায়েল সরকার আসলে গাজায় সাংবাদিকদের উপস্থিতি চায় না। কারণ তারা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যে নৃশংসতা চলছে, তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে– এমন প্রমাণ লুকাতে চায়।
ইসরায়েল এরই মধ্যে গাজায় আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিয়েছে। গাজার নিজস্ব প্রেস কমিউনিটিও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, যুদ্ধকালীন বেসামরিকদের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও সুরক্ষা নিশ্চতের বিধান আছে। গাজায় সাংবাদিকদের হত্যার ব্যাপারে কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ইসরায়েল সাংবাদিকদের হত্যা ও নীরব করার জন্য সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
গাজায় সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটে গত আগস্টে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ওই ইসরায়েলি হামলায় মোট ২১ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে আলজাজিরার সাংবাদিক মোহাম্মদ সালামা, রয়টার্সের হুসসাম আল মাসরি, এপির মরিয়ম আবু দাকা এবং আলোকচিত্রী আহমেদ আবু আজিজ, মুয়াজ আবু ত্বাহা ছিলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম