
পরাশক্তি রাশিয়া এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের কাছে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত ইঞ্জিন সরবরাহ করতে যাচ্ছে— এমন খবর ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন।
‘চিরশত্রু’ পাকিস্তানের কাছে রাশিয়ার এ ধরনের সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের গুঞ্জনকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেস। তাদের দাবি, এই ঘটনা মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার প্রমাণ।
যদিও রাশিয়ার একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসলামাবাদকে এখনো যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন সরবরাহের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি মস্কো। রাশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে ভারতের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় উত্তেজনা, কারণ নয়াদিল্লি বিগত সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে পশ্চিমাদের, বিশেষ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছিল।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে চীনা প্রযুক্তির জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে, এবং এসব বিমানে ব্যবহারের জন্য রাশিয়া আরডি-৯৩এমএ ইঞ্জিন সরবরাহ করতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ খবরে ভারতের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ সামাজিক মাধ্যমে জানান, রাশিয়া যদি পাকিস্তানে এই ইঞ্জিন রফতানি করে, তবে তা মোদি সরকারের চরম ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির ব্যক্তিগত কূটনীতি কেবল ‘দেখনদারি’ মাত্র, যার বাস্তব কোনো কৌশলগত সাফল্য নেই। এ বিষয়ে তিনি সরকারের কাছ থেকে জবাবও দাবি করেছেন।
যদিও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি কিছু বিশ্লেষকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানায়, পাকিস্তানকে ইঞ্জিন সরবরাহের বিষয়টি ভারতীয় কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না-ও হতে পারে। কারণ, চীন ও পাকিস্তান এখনো রুশ ইঞ্জিনের সমতুল্য কোনও প্রযুক্তি তৈরি করতে সক্ষম হয়নি—যা ভবিষ্যতে ভারতীয় পক্ষের জন্য একধরনের সুবিধা হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
রাশিয়ার এক কর্মকর্তা ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ইসলামাবাদকে ইঞ্জিন সরবরাহের কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তিনি এই ধরনের খবরকে 'ভুল ব্যাখ্যা' হিসেবে অভিহিত করেন এবং অভিযোগ করেন, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়া-ভারত সহযোগিতায় ফাটল ধরাতে চাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।
এ দিকে, বিজেপি এই বিতর্ককে ‘তথ্যযুদ্ধ’ আখ্যা দিয়ে বলছে, এর মাধ্যমে সরকারকে দুর্বল দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ধরনের গুজব ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ব্যবহৃত একটি প্রোপাগান্ডা মাত্র।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম