জলবায়ু পরিবর্তন ‘মানবতার ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করবে না। বিলিয়নেয়ার সমাজসেবক বিল গেটস একটি দীর্ঘ স্মারকলিপিতে যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন, মানবসৃষ্ট বিশ্ব উষ্ণায়ন মোকাবেলায় একটি আনুপাতিক এবং বাস্তবসম্মত পদ্ধতির উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
ব্রাজিলে কপ-৩০ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের কয়েকদিন আগে সোমবার দিনের শেষের দিকে এই বার্তাটি প্রকাশিত হয়েছিল। জলবায়ু অভিযোজন এবং মানব উন্নয়নের ওপর সভার মনোযোগের প্রশংসা করেছেন গেটস।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা গেটস তার ‘ব্রেকথ্রু এনার্জি’ সংস্থার মাধ্যমে সবুজ প্রযুক্তির একজন প্রধান সমর্থক। তিনি স্বীকার করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ‘গুরুতর পরিণতি’ হবে, তবে তিনি আরো বলেছেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে মানুষ পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গায় বসবাস করতে এবং উন্নতি করতে সক্ষম হবে।’
বিল গেটস বলেছেন, তিনি জানতেন যে, কিছু জলবায়ু সমর্থক তার কার্বন এই কর্মকাণ্ডে দ্বিমত পোষণ করবেন এবং তাকে ভণ্ড বলবেন। তিনি বলেছেন, তিনি ‘বৈধ’ কার্বন ক্রেডিট দিয়ে সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিপূরণ দেন।
গেটস তার ‘জলবায়ু সম্পর্কে তিনটি কঠিন সত্য’ তুলে ধরেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সভ্যতাকে শেষ করবে না, তাপমাত্রা অগ্রগতির সর্বোত্তম পরিমাপ নয়, স্বাস্থ্য এবং সমৃদ্ধি হল উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা।’
দীর্ঘমেয়াদী উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণে গ্রহটি বিপজ্জনকভাবে পিছিয়ে থাকলেও গেটস যুক্তি দিয়েছেন, সঠিক পরিসংখ্যানের ওপর স্থির থাকার পরিবর্তে বিশ্বের নির্গমন কমানোর অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দরিদ্র মানুষের জন্য, দারিদ্র্য এবং রোগ এখন আরো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোতে বিশেষ করে যারা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করেন তাদের জন দুর্ভোগ রোধ করা’।
উদাহরণস্বরূপ, অত্যন্ত গরম এবং ঠান্ডা দিন সীমিত করার ওপর কম মনোযোগ দেওয়া, এবং ‘কম লোক দারিদ্র্য এবং দুর্বল স্বাস্থ্যের মধ্যে বাস করে যাতে চরম আবহাওয়া তাদের জন্য এতো হুমকি না হয়’ তা নিশ্চিত করার ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়া।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে গেটস বলেছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু কৌশল হলো সিমেন্ট, ইস্পাত এবং জেট জ্বালানির মতো উপকরণের জন্য তথাকথিত সবুজ প্রিমিয়াম, পরিষ্কার এবং নোংরা উপায়ের মধ্যে খরচের পার্থক্য শূন্যে নামিয়ে আনা।
তিনি ৩০ বছর আগে মাইক্রোসফটে লেখা একটি স্মারকের সাথে তুলনা করে তিনি কোম্পানিকে ইন্টারনেটকে তার সমস্ত কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। একইভাবে, তিনি বলেছেন, জলবায়ু সম্প্রদায়ের কপ-৩০ এবং তার পরেও একটি ‘কৌশলগত মূলনীতি’ প্রয়োজন।
তিনি বলেছেন, ‘মানব কল্যাণের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে এমন বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিন’।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

