ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রায় তিন বছর পূর্ণ হতে চললেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বড়দিনের আগের রাতে সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশের মানুষের অটুট সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে পুতিনের নাম উল্লেখ না করে তার মৃত্যু বা ধ্বংস কামনা করেছেন তিনি।
জেলেনস্কি তার বার্তায় ইউক্রেনীয়দের ঐক্যের প্রশংসা করে বলেন, রাশিয়া যত কষ্টই দিক না কেন, তারা ইউক্রেনীয়দের হৃদয় ও পারস্পরিক বিশ্বাস ধ্বংস করতে পারবে না।
পুতিনের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আজ আমরা সবাই একটি স্বপ্ন ভাগ করে নিচ্ছি, সবার জন্য আমাদের একটাই প্রত্যাশা- তার ধ্বংস হোক’।
তবে তিনি এও উল্লেখ করেন যে, ঈশ্বরের কাছে তাদের মূল প্রার্থনা হলো ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনা। তাঁর মতে, ইউক্রেনীয়রা লড়াই করেই এই শান্তি অর্জনের যোগ্য।
বড়দিনের উৎসব যখন দুয়ারে, তখনই ইউক্রেন জুড়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। মঙ্গলবার চালানো এই হামলায় অন্তত তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং দেশের বড় একটি অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এই আক্রমণকে ‘নাস্তিকদের আঘাত’ আখ্যা দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, শত শত শাহেদ ড্রোন এবং কিনঝাল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে রাশিয়ানরা আবারও দেখিয়েছে তারা আসলে কারা।
যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে জেলেনস্কি সাংবাদিকদের কাছে তার প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তার পরিকল্পনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো হলো, ইউক্রেন তার পূর্বাঞ্চলের শিল্পসমৃদ্ধ কেন্দ্র থেকে সেনা সরিয়ে নিতে রাজি। মস্কোকেও একই এলাকা থেকে সেনা সরাতে হবে। ওই এলাকাটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক হামলা শুরু হয়। গত প্রায় তিন বছরে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। এই দীর্ঘ সময়ে দুই দেশের হাজার হাজার সৈন্য ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
বড়দিনের এই উৎসবের দিনেও জেলেনস্কির বক্তব্যে যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

