
সিলেটের ওসমানীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শেখ মাসুক মিয়া (৩৫) হত্যা মামলায় চার ভাইসহ ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৬ মে) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এই রায় ঘোষণা করেন।
নিহত শেখ মাসুক মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: শেখ আলফু মিয়া (৪১), শেখ পংকী মিয়া (৪৩), শেখ তোতা মিয়া (৫৭), শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩), শেখ পংকীর স্ত্রী লাভলী বেগম, লেবু মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৮), মৃত আখলাছ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬), গ্রামতলা দাসপাড়া গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩)। এদের মধ্যে দিপু মিয়া ছাড়া সবাই রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনা
২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকেল ৩টার দিকে গোয়ালাবাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন মাসুক মিয়া। সেদিন রাতে তিনি বাড়ি না ফেরায় স্ত্রী মোবাইল ফোনে কল করেন। প্রথমে সংযোগ পাওয়া গেলেও পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পরদিন ধানক্ষেতে ওসমানীনগরের দাসপাড়ায় গফুর মিয়ার বাড়ির পাশে মাসুক মিয়ার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরিচয় শনাক্তে মাইকিং করা হলে ভাই শেখ আলফু ও শেখ তোতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
প্রথমে আলফু মিয়া অজ্ঞাতপরিচয়ে একটি মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে ওসমানীনগর থানার তৎকালীন ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন খুনের সঙ্গে নিহতের ভাই আলফু, পংকী ও তোতার সংশ্লিষ্টতা পান এবং তাদের আটক করেন। এরপর থানার এসআই মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
টাকা-পাঠানো ও জমি নিয়ে বিরোধ
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আল আসলাম মুমিন জানান, প্রবাসে থাকাকালীন শেখ মাসুক মিয়া ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন। সেই টাকা দিয়ে তারা নিজেদের নামে জমি কিনলেও মাসুক দেশে ফিরে জমি নিজের নামে লিখে দিতে বললে বিরোধ শুরু হয়। এর জেরেই পরিকল্পিতভাবে দুই ভাবিসহ চার ভাই মিলে মাসুককে হত্যা করে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম