শুক্রবার,

৩০ মে ২০২৫,

১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শুক্রবার,

৩০ মে ২০২৫,

১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Radio Today News

প্রথমবারের মতো চীনের বাজারে প্রবেশ করল দেশীয় ১০ টন আম

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২৮ মে ২০২৫

Google News
প্রথমবারের মতো চীনের বাজারে প্রবেশ করল দেশীয় ১০ টন আম

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এবার চীনের বাজারে প্রবেশ করল দেশীয় আম। বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাতক্ষীরা ও যশোর অঞ্চলের আম নিয়ে ১০ টনের প্রথম চালানটি চীনে যায়। দীর্ঘ প্রস্তুতি ও নানা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণের পর কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয় এই কাঙ্খিত রপ্তানি। এ উপলক্ষে বিমানবন্দরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশি আমের চীনে রপ্তানি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করবে। এটি শুধু একটি আম রপ্তানির ঘটনা নয়, বরং দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। আশা করি, চীনের ভোক্তারা বাংলাদেশের আমের স্বাদ উপভোগ করবেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পেয়ারা ও কাঁঠাল রপ্তানির সম্ভাবনাও ইতোমধ্যে বিবেচনায় নিয়েছে চীন। খুব শিগগির আরও কিছু কৃষিপণ্য সে দেশের সুপার মার্কেটগুলোতে স্থান পাবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও মো. আনোয়ার হোসেন।

সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে আম রপ্তানি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, রপ্তানির অন্যতম প্রধান বাধা উচ্চ বিমান ভাড়া। কৃষিপণ্য রপ্তানি টেকসই করতে এ ব্যয় কমানো জরুরি। এজন্য বিমান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে ডিও লেটার পাঠানো হবে। তিনি কৃষি সচিবকে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে নিয়ে বিমান মন্ত্রণালয়ে আলোচনায় বসার পরামর্শ দেন।

কৃষি সচিব বলেন, আমাদের আম এখন বিশ্বের ৩৮টি দেশে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারে আরও বিস্তার ঘটানো হবে। শুধু প্রবাসী নয়, বিদেশি ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশি আম পৌঁছানোর মতো সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে।

রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিতে ২০২২ সালের জুলাই থেকে পাঁচ বছরমেয়াদি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, গাছের পরিচর্যা ও প্যাকেজিং প্রক্রিয়ায় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যার ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে আম উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে সপ্তম হলেও রপ্তানির তালিকায় এতদিন পিছিয়ে ছিল দেশটি। এবারের সফল রপ্তানির নেপথ্যে ছিল কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পিত উদ্যোগ, গুণগত মান রক্ষা, আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা বোঝা এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কূটনীতির সমন্বিত প্রয়াস। 

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম সমকালকে বলেন, এ সফলতা শুধু আম নয়, অন্যান্য কৃষিপণ্যের জন্যও আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন দরজা খুলে দেবে। কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়লে কৃষকের আয় যেমন বাড়বে, তেমনি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারও সমৃদ্ধ হবে।

৬৭ কোটি টাকার আম যাবে বিদেশে
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর চার জেলার চাষিরা চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৮৯২ কোটি টাকার আম বিক্রি করবেন। এর মধ্যে বিদেশে রপ্তানি হবে ৬৭ কোটি টাকা মূল্যের ৬ হাজার ৭২০ টন আম। ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এসব আম রপ্তানি হবে। 

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের