বাংলাদেশের পাট, বস্ত্র ও ওষুধ শিল্পে উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন

শুক্রবার,

২৮ নভেম্বর ২০২৫,

১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

শুক্রবার,

২৮ নভেম্বর ২০২৫,

১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

Radio Today News

বাংলাদেশের পাট, বস্ত্র ও ওষুধ শিল্পে উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৯:৫৮, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

Google News
বাংলাদেশের পাট, বস্ত্র ও ওষুধ শিল্পে উৎপাদনে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী চীন

বাংলাদেশের সবুজ প্রযুক্তি, পাট, বস্ত্র ও ওষুধশিল্পে বড় ধরনের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন চীনা বিনিয়োগকারীরা। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত উৎপাদন খাতের রূপান্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এমন বিনিয়োগের আগ্রহ এসেছে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠককালে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নার (এক্সিম ব্যাংক) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং দোংনিং এ আগ্রহের কথা জানান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটির প্রেসিডেন্ট ড. মা জুন।

ইয়াং দোংনিং বলেন, বাংলাদেশে চীনের দীর্ঘদিনের অবকাঠামো বিনিয়োগের পাশাপাশি এখন তারা উৎপাদন খাতে মনোযোগ দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে রুফটপ সোলার প্যানেল এবং দেশের ‘সোনালি আঁশ’ পাটকে কেন্দ্র করে জ্বালানি, বায়োসার ও প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরির বড় প্রকল্প। তিনি জানান, এসব সরাসরি উৎপাদন বিনিয়োগে এক্সিম ব্যাংকও অর্থায়নে আগ্রহী।

ড. মা জুন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্প চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। তারা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায়। 

তিনি আরও বলেন, চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো সবুজ জ্বালানি, সার ও প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরির জন্য বছরে ১০ লাখ টন পর্যন্ত পাট ব্যবহার করতে প্রস্তুত। চীনা অর্থায়নে পাটভিত্তিক যৌথ উদ্যোগের বড় সুযোগ রয়েছে।

চীনের এই আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা চাইলে বাংলাদেশকে উৎপাদনশীল পণ্য রপ্তানির একটি হাবে রূপান্তর করা সম্ভব—যা উন্নত দেশসহ চীনে রপ্তানির সুযোগ বাড়াবে। তিনি ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবাকে চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেন।

ড. ইউনূস বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সৌরশক্তি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীন রুফটপ সোলারসহ সবুজ জ্বালানি খাতে বাংলাদেশকে সহায়তায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, দেশের বিপুল তরুণ কর্মশক্তি ও বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো যৌথ উদ্যোগে ব্যবহারের বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

তিনি বলেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। আমরা চাই, এগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে যাক।

ইয়াং দোংনিং জানান, এআই ও ই-কমার্স খাতেও বিনিয়োগের সুযোগও চীন বিবেচনা করছে—যে দু’টি ক্ষেত্রে চীন ইতিমধ্যে বৈশ্বিক নেতৃত্বে রয়েছে।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কারখানা স্থাপনের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর এবং মিয়ানমার-থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের কৌশলগত নিকটতা বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই অঞ্চলের সমুদ্র প্রবেশাধিকারে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। চীনা শিল্প কারখানাগুলো এখানে স্থানান্তর করলে উৎপাদিত পণ্য উন্নত দেশসহ চীনেও রপ্তানি করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ চীনের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়বে এবং স্থানান্তরিত কারখানার পণ্য রপ্তানি আরও সহজ হবে।

বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা হংকংয়ের একটি আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় নিয়োজিত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের