
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাতে ইসরায়েলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি বা স্পাইওয়্যার আমদানির অভিযোগ ছিল। তবে সরকার সেসব অভিযোগ কখনও স্বীকার করেনি।
গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এ বিষয় নতুন করে আলোচনায় আসে। কানাডাভিত্তিক প্রযুক্তি অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কীভাবে সরকার ২০১৫ সাল থেকে ১০ বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ নজরদারি সরঞ্জাম আমদানি করেছে।
গত সোমবার নিজেদের ওয়েবসাইটে টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
প্রায় এক বছরের গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি ৭০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার নজরদারি সরঞ্জাম আমদানিতে প্রায় ১৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে; যার পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এ সময়ে ১৬০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের নজরদারি সরঞ্জাম দেশে আমদানি করা হয়; যার বেশির ভাগই ছিল অস্বচ্ছ ক্রয় প্রক্রিয়া এবং তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতায়।
আমদানি করা প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে– আইএমএসআই ক্যাচার, ওয়াই-ফাই ইন্টারসেপ্টর অ্যান্ড সেলিব্রাইট, ফিনফিশার, প্রিডেটটের মতো উন্নত স্পাইওয়্যার। এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর নজরদারি করা হতো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে নজরদারি ব্যবস্থা ঔপনিবেশিক আমলের পুলিশিং ঐতিহ্য থেকে আধুনিক সাইবারভিত্তিক নেটওয়ার্কে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা এবং ২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলার পর সন্ত্রাস দমনের অজুহাতে এই নজরদারির বিস্তার ঘটে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম