রোববার,

২৫ মে ২০২৫,

১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রোববার,

২৫ মে ২০২৫,

১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Radio Today News

আয় বাড়াবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর 

সানজিদা যুথী 

প্রকাশিত: ২২:৫৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ২২:৫৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Google News
আয় বাড়াবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর 

কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর। বঙ্গোপসাগরের তীরে ১ হাজার ৩১ একর জায়গা জুড়ে এ বন্দর নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামী ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এটি চালু হলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশি জাহাজ নোঙ্গরের মাধ্যমে দেশের আয় বাড়বে। 


জানা গেছে, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হলে ৮ হাজার ২০০ টিইইউএস ক্ষমতাসম্পন্ন কন্টেনার বহনকারী জাহাজ নোঙ্গর করতে পারবে। ফলে পণ্য নিয়ে সিঙ্গাপুর, কলম্বো আর মালয়েশিয়ার বন্দরে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না। এতে করে সময় ও ব্যয় দুটোই কমবে। 


২০২০ সালের ১০ মার্চ একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয় মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় সড়ক নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।


এ বিষয়ে নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর দৃশ্যমান হয়ে গেছে। ২০২৬ সালে এটি অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করবে। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের জুলাই নাগাদ জেটি ও কন্টেনার ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ শুরু  হবে। এখানে বড় ধরনের ফিডার  ভেসেল আসবে। অর্থ ও সময় বাঁচবে। অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’


বর্তমানে গভীর সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে মাতারবাড়ি এলাকায় চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। কাজ চলছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পেরও। এছাড়া বন্দরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে চ্যানেল। যেটি ২৫০ মিটার চওড়া, ১৮ দশমিক ৫ মিটার গভীর এবং ১৪ দশমিক ৩ মিটার দীর্ঘ। সাগর থেকে উপকূল পর্যন্ত পাথর দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। 


প্রকল্প সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বন্দরের নিরাপত্তায় উত্তর ও দক্ষিণ দিকে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রের ঢেউ প্রতিরোধ বাঁধ। প্রকল্পের বিশদ নকশা তৈরি কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া জেটি নির্মাণ, জাহাজ হ্যান্ডেলিং সরঞ্জাম সংগ্রহ ও টাগ বোট ক্রয়সহ তিনটি প্যাকেজে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 


প্রকল্প সূত্র জানায়, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হলে দেশের অন্যান্য বন্দর থেকে এর দূরত্ব কম হবে। চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রপথে মাতারবাড়ির দূরত্ব ৩৪ নটিক্যাল মাইল, পায়রা বন্দর থেকে মাতারবাড়ির দূরত্ব ১৯০ নটিক্যাল মাইল ও মোংলাবন্দর থেকে গভীর সমুদ্র বন্দরের দূরত্ব ২৪০ নটিক্যাল মাইল। ফলে সব দিক থেকে সাশ্রয়ী হবে। 


এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলোতে সাধারণত মাত্র ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটবিশিষ্ট জাহাজ নোঙর করতে পারে। তবে সম্প্রতি ১০ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে। এসব জাহাজ ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৪০০ টিইইউএস কন্টেনার বহন করতে পারে। একটি মাদার ভেসেলের ধারণক্ষমতা ৮০০০ থেকে ১০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে ৮ হাজার টিইইউসের বেশি সক্ষমতাসম্পন্ন কন্টেনার বহনকারী জাহাজ ভিড়তে পারবে।’ 


মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে বন্দর নির্মাণে ব্যয় হবে ৮ হাজার ৯৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এতে জাপানি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা ঋণ সহায়তা রয়েছে ৬ হাজার ৭৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। বাকি ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আসবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) থেকে। এছাড়া বন্দর এলাকায় সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৮২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এতে জাইকার ঋণ রয়েছে ৬ হাজার ১৫০ কোটি ১৯ লাখ টাকা। বাকি ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ সড়ক ও জনপথের (সওজ) তহবিল থেকে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। 
 

রেডিওটুডে নিউজ/ইআ

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের