
“চীনের হুবেই প্রদেশের প্রাণকেন্দ্র উহান শহরকে নিজের বাড়ি বানিয়েছেন জ্যাকি। শুরুটা হয়েছিল কেবল নিজের চীনা ভাষা শেখার জন্য ছোট্ট ভিডিও বানিয়ে। কিন্তু এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। তার ভিডিওতে শুধু ভাষা শেখা নয়, স্থানীয় জীবনযাপন, খাবার আর সংস্কৃতির রঙিন ঝলক সবই থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনুসারীর সংখ্যা এখন লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তার ক্যামেরার চোখে ধারণ করা প্রতিটি ভিডিও যেন হয়ে উঠেছে এক জীবন্ত চিত্রকাব্য।
জ্যাকি বলেন, ‘এটা আমার তৃতীয়বার বেইজিং আসা। আমি চাই, পশ্চিমা মানুষদের দেখাতে—চীন আসলে কেমন, গ্রেট ওয়াল কেমন দেখতে লাগে, এবং কেন এই জায়গা তাদের ঘুরে দেখা উচিত। এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
প্রথমদিকে ভিডিও বানাতেন কেবল চীনা দর্শকদের জন্য। কিন্তু ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে বেড়ে যায় ‘চায়না ট্র্যাভেল’ ভিডিওর জনপ্রিয়তা। তখন থেকেই জ্যাকি সিদ্ধান্ত নেন, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মেও ভিডিও পোস্ট করবেন।
‘বিদেশি দর্শকরা জানতে চায়—চীনের মানুষ কেমন, খাবার কেমন, জীবনযাপন কতটা আধুনিক? অনেকেই চীনে আসেননি, কিন্তু যা জানেন, তা বেশিরভাগই ভুল তথ্য। ওরা ভাবে মানুষ গরিব, বা অনুন্নত। কিন্তু এটা ঠিক না। পশ্চিমা গণমাধ্যম অনেক কিছুই ভুলভাবে বলেছে। আমি চাই, সত্যিটা ওরা নিজের চোখে দেখুক।’
চীনা ভাষায় পুরোপুরি পারদর্শী না হলেও, রাস্তাঘাটের মানুষের সঙ্গে কথা বলায়, হাসিতে আর কৌতূহলে জয় করে নিচ্ছেন সবার মন।
ভবিষ্যতে চীনের আরও প্রাচীন শহর, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনুসন্ধানে বেরোতে চান জ্যাকি। সিছুয়ান, লিচিয়াং, কুনমিং, এমনকি দূর পশ্চিম চীনের সিনচিয়াং অঞ্চলেও যেতে চান তিনি।
‘আমি সিনচিয়াংয়ে যেতে চাই, কারণ আমি ল্যাম্ব কাবাব খেতে ভালোবাসি। উহানে আমি বেশিরভাগ সময় থাকি, কিন্তু আমি চায়নার অন্য শহরগুলোতেও যেতে চাই—বেইজিং, শাংহাই, ছেংতু, কুয়াংচৌ —সব জায়গায়।’
এই ব্রিটিশ ভ্লগার আসলে চীনকে জানার এক মানবিক জানালার মতো হয়ে উঠেছেন —যিনি রঙ, রস, আর বাস্তবতার গল্প দিয়ে তৈরি করেছেন এক অনন্য সংযোগ।
জ্যাকির ফলোয়াররা মনে করেন, জ্যাকি প্রমাণ করে দিয়েছেন—সংস্কৃতি আর ভালোবাসার কোন সীমান্ত নেই। একটি ক্যামেরা আর একটি খোলা মনই যথেষ্ট, নতুনকে জানার আর জানানোর জন্য। জ্যাকিদের মাধ্যমেই বিশ্ব আরও কাছাকাছি আসে।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম