'দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে প্রথমবারের মতো বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ-২০২৫। বুধবার থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে সারাদেশে উদযাপিত হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। প্রাণিসম্পদ খাতে ‘অবদান রাখায়’ ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পদক দিতে যাচ্ছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালা এবং প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার সকাল ৯টায় উদ্বোধন করা হবে। এই প্রদর্শনী চলবে তিন দিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের জন্যে ভিডিওতে শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন। প্রধান অতিথি প্রাণিসম্পদ মেলাও উদ্বোধন করবেন। মেলা তিনদিন চলবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি–বেসরকারি সমন্বয় আরও শক্তিশালী হবে।
জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের কর্মসূচির মধ্যে পদক বিতরণ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, র্যালি, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রদর্শনী থাকবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পাঁচটি বিভাগে ১৫টি পদক দেওয়া হবে। প্রতিটি বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পাবে।
অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জিডিপিতে এ খাতের অবদান ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপিতে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং অর্থমূল্যে প্রাণিসম্পদ জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৯১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।
উপদেষ্টা বলেন, পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের খাত, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে। দেশে নিবন্ধিত ৮৫ হাজার ২২৭টি বাণিজ্যিক এবং প্রায় এক লাখ ৯১ হাজার প্রান্তিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডিম উৎপাদিত হচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য।
মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) প্রতিরোধে ১৭ লাখ ডোজ টিকা, ক্ষুরা রোগ (এফএমডি) নির্মূলে নির্দিষ্ট অঞ্চলে জোনিং কার্যক্রম এবং ছাগলের পিপিআর রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রায় ছয় কোটি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

