
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় গোটা জেলায় কারফিউ জারির তৃতীয় দিন চলছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এর পর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে।
সরেজমিন, জেলা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। দু-একটি ছোট যানবাহন ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি।
এদিকে, সকাল থেকে ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতা এবং সেবাপ্রত্যাশীরা। ক্ষতির মুখে হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গোটা গোপালগঞ্জে এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাত আটটা থেকে ২২ ঘণ্টার কারফিউ শুরু হয়। চলে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। এরপর সেটি আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে শুক্রবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বলবৎ করা হয়। তবে শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত তা শিথিল করা হয়।
সারাদেশে মাসব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। এর আগে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে তারা এটিকে ‘লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ হিসেবে নামকরণ করেন। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গোপালগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও ছাত্রলীগ (নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীরা এটি প্রতিহতের ঘোষণা দেন।
এনসিপির নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে পথে বাধা পায়। সকালে পুলিশ এবং ইএনওর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের দায়ি করা হয়।
দুপুরে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। হামলার কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছান এনসিপির নেতারা। তারা সেখানে স্লোগান ও বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে তারা মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দিলে তাদের গাড়িবহর ঘিরে হামলা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনসিপি নেতাদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে এখন পর্যন্ত পাঁচ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১১০ জনের নামসহ অন্তত ৭০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম