রাজধানীর ৩৩ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগ

বৃহস্পতিবার,

১৩ নভেম্বর ২০২৫,

২৯ কার্তিক ১৪৩২

বৃহস্পতিবার,

১৩ নভেম্বর ২০২৫,

২৯ কার্তিক ১৪৩২

Radio Today News

আ. লীগের কর্মসূচি ঘিরে বেড়েছে নাশকতা

রাজধানীর ৩৩ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগ 

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:২৭, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

Google News
রাজধানীর ৩৩ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, ৯টি বাসে অগ্নিসংযোগ 

রাজধানীতে হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। চলতি মাসে গত ১২ দিনে ঢাকায় ১৮টি স্থানে ৩৩টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে কমপক্ষে ৯টি বাসে। এর আগে গত অক্টোবরে অন্তত ১০ স্থানে ককটেল হামলা চালানো হয়। বেশির ভাগ হামলায় মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা।

বিস্ফোরণের ঘটনায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মীসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে দলটির নেতাকর্মীরা আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে চোরাগোপ্তা ককটেল হামলা চালাচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃতরা ককটেল হামলার ঘটনায় নানা তথ্য দিয়েছে। প্রতিটি হামলায় পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পাচ্ছে হামলাকারীরা। 

গত সোমবার রাতে বাংলামটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যালয়ের সামনে ককটেল হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুজনকে ধাওয়া দিয়ে আটক করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের একজন গুলিস্তান এলাকার দর্জি ইউসুফ বেপারী। অপরজনের নাম মাসুদুর রহমান। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, পাঁচ হাজার টাকায় চুক্তিতে তারা ককটেল হামলা চালিয়েছেন। রাজধানীর একটি থানা ছাত্রলীগের এক নেতা তাদের এই ককটেল সরবরাহ করেন। তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে ককটেল হামলা ও বাসে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। 

এদিকে, গতকাল মিরপুরে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া সোমবার ও মঙ্গলবার যাত্রাবাড়ীর কাজলা ও রায়েরবাগ, ধানমন্ডি, সূত্রাপুর, তুরাগ, বাড্ডা ও শাহজাদপুরে আরও সাতটি বাস এবং ভাটারা এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। 

ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত রাজধানীতে ১৮টি স্থানে ককটেল হামলা চালানো হয়েছে। 

গত মঙ্গলবার রাতে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ছাড়াও রাজধানীর একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে রাত ৯টার দিকে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণ ঘটানোর পরই দ্রুত পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। রাত ১০টার পর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে হাতিরঝিলের রেইনবো ক্রসিংয়ে। একই সময়ে ককটেল বিস্ফোরণ হয় কারওয়ান বাজারের মাছের আড়তের সামনেও। রাতে মোহাম্মদপুরে একটি স্কুলে দুটি ককটেল হামলা হয়।
এ ছাড়া গত সোমবার রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, বাংলামটর, মৌচাকসহ ১০টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফার্মগেটে প্রধান সড়কের ওপর দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। মোটরসাইকেল থেকে ককটেল ছুড়ে পালানোর সময় জনতার হাতে আবদুল হাকিম ও শাওন মোল্লা নামে দুইজন আটক হয়। আবদুল হাকিম নীলফামারীর কচুকাটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং শাওন তেজগাঁও থানা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী। পরে তাদের তেজগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মোটরসাইকেল চালকের ব্যাগ তল্লাশি করে বোমা তৈরির বিস্ফোরক, কয়েকটি খালি কৌটা ও স্কচটেপ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হয়। এর আগে ৩ নভেম্বর ফার্মগেটসংলগ্ন তেজতুরীবাজার এলাকায় ককটেল হামলা করে পালানোর সময় দুজনকে হাতেনাতে আটক করে জনতা। পরে তাদের পুলিশের কাছে দেওয়া হয়। ৭ নভেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে কাকরাইলে সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চের ফটকে ককটেল হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়, অপরটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় ভেতরে গিয়ে পড়ে। 

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

একই দিন গভীর রাতে মোহাম্মদপুরের সেন্ট যোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভেতরে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, একটি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুটি ককটেল ছোড়া হয়। 

মোহাম্মদপুর থানার ওসি রফিক আহমেদ বলেন, ঘটনার পর থেকেই তদন্ত চলছে। মোটরসাইকেলে দুজন ছিল। তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশে নির্বাচন-পূর্ববর্তী সময়ে সহিংসতার ধারা আছে। এটিকে মাথায় রেখে গোয়েন্দা নজরদারি, টহল এবং সামাজিক মাধ্যমে মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর বা নাশকতার ঘটনা ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সূত্র: সমকাল

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের