চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষায় বড় পরিবর্তন এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ থাকা ‘পোষ্য কোটা’ পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সব ইউনিটে আবেদন করার ন্যূনতম জিপিএর মানও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রেজিস্ট্রার বলেন, “শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বৈঠকে ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচিও চূড়ান্ত করা হয়। সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, আগামী ২ জানুয়ারি ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে চবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা, ৯ জানুয়ারি ‘গ’ ইউনিট এবং ১০ জানুয়ারি ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সাব ইউনিটগুলোর মধ্যে ‘ঘ-১’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৫ জানুয়ারি, ‘খ-১’ ইউনিটের ৭ জানুয়ারি এবং ‘খ-২’ ইউনিটের পরীক্ষা ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন শুরু হবে ১ ডিসেম্বর এবং চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের ভর্তি প্রক্রিয়ায় জিপিএর ন্যূনতম মান গত বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমানো হয়েছে। বিজ্ঞান অনুষদের ‘ক’ ইউনিটে আবেদনকারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ সাত দশমিক ৭৫ থাকতে হবে, তবে আলাদাভাবে মাধ্যমিকে অন্তত চার পয়েন্ট ও উচ্চ মাধ্যমিকে তিন দশমিক ২৫ থাকতে হবে। কলা ও মানবিক অনুষদের ‘খ’ ইউনিটে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম জিপিএ সাত এবং বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য সাত দশমিক পাঁচ নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ‘গ’ ইউনিটে জিপিএ থাকতে হবে সাত দশমিক পাঁচ এবং সমন্বিত ‘ঘ’ ইউনিটে সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম জিপিএ নির্ধারণ করা হয়েছে সাত।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফল তুলনামূলক দুর্বল হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে জিপিএর শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ের শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে। এছাড়া যেসব বিভাগে শতাধিক আসন ছিল, সেগুলো সর্বোচ্চ ১০০ আসনে সীমিত করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পোষ্য কোটা বাদ দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট নয়টি কোটা বহাল থাকবে। এসব কোটার মধ্যে রয়েছে— মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, বিদেশি শিক্ষার্থী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠী, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি শিক্ষার্থী, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, বিকেএসপির খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় এবং দলিত শিক্ষার্থী।
গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। তাদের সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কোটার সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ কমানো হয়েছিল। এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা পুরোপুরি বাতিলের সিদ্ধান্ত
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম
